সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি-জামায়াতের ৫৬ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

নারায়ণগঞ্জ জেলার মানচিত্র

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার মৌচাক এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মুখোশধারী একদল যুবকের মশাল মিছিল ও টায়ারে আগুন দেওয়ার ঘটনায় বিএনপি-জামায়াত ও গণ অধিকার পরিষদের ৫৬ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় ২১ জনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি ৩৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দেবাশিষ কুণ্ডু বাদী হয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে আজ বৃহস্পতিবার সকালে মামলাটি করেন।

বিএনপির নেতা-কর্মীদের হয়রানি করার উদ্দেশ্যে ওই মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপির কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। ১০ ডিসেম্বর বিএনপির নেতা-কর্মীরা যাতে ঢাকায় সমাবেশে যোগ দিতে না পারেন, সে জন্য তাঁরা গায়েবি মামলা দিচ্ছে।

মামলার আসামিরা হলেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির আবদুর রহমান, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শহীদুল্লাহ্, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল হাই, গণ অধিকার পরিষদের জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফ ভূঁইয়া, থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম, মহানগর ছাত্রদলের সহসভাপতি জুয়েল রানা, জেলা জামায়াতের সদস্য জয়নাল আবেদীন ফারুক, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য পলাশ, ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রওশন আলী, সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন, যুগ্ম আহ্বায়ক মাজহারুল হক, ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলজার হোসেন, বিএনপি নেতা আনিস, জাকির, থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইকবাল হোসেন, থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি জয়নাল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রাজা মিয়া, থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মুক্তার হোসেন, যুবদল নেতা মাসুম গাজী, বিএনপি নেতা আফজাল হোসেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকায় বিএনপির ৫০-৫৫ নেতা-কর্মী লাঠিসোঁটা, হকিস্টিকসহ দেশি অস্ত্র নিয়ে নাশকতার উদ্দেশ্যে মহাসড়ক অবরোধ করে মিছিল করেন ও স্লোগান দেন। এ সময় তাঁরা ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান এবং টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন। মিছিল থেকে তিন-চারটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে তাঁরা দৌড়ে পালিয়ে যান। ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরিত ককটেলের অংশ, পোড়া টায়ারের অংশ, মশালমিছিলে ব্যবহৃত সাতটি লাঠি, টিনের কৌটা ও গাড়ির ১১টি ভাঙা কাচের অংশ জব্দ করা হয়।

এদিকে আজ সকালে সদর উপজেলার ফতুল্লায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক শহীদুল ইসলামসহ ২১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫০ জনের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেছে পুলিশ। মামলার বাদী থানার উপপরিদর্শক মফিজুল ইসলাম পরিকল্পিতভাবে নাশকতার অভিযোগে মামলা করেন।

অন্যদিকে চাষাঢ়ায় বিস্ফোরক ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এইচ মামুনসহ ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৪০ জনকে আসামি করে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় আরেকটি মামলা হয়েছে। থানার এসআই আজহারুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, মশাল মিছিলে ককটেলের বিস্ফোরণ ও সড়কে আগুন দেওয়ার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক তিনটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত গত ১৫ দিনে নারায়ণগঞ্জের সাতটি থানায় ১০টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে সাতটি মামলার বাদী পুলিশ। অন্য তিনটি মামলার বাদী আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতারা।