আপনারা ভোট দিয়ে আপনাদের ইমানি দায়িত্ব পালন করবেন: নিক্সন চৌধুরী

সভার মঞ্চে বসে আছেন সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান ওরফে নিক্সন চৌধুরীসহ অন্যরা। গতকাল বুধবার ফরিদপুরের ভাঙ্গার নূরাল্লাগঞ্জ ইউনিয়নেছবি: প্রথম আলো

ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা-চরভদ্রাসন-সদরপুর) আসনের সংসদ সদস্য ও যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী বলেছেন, ‘২০১৪ সালে কোন দুঃখে, কোন জ্বালায়, কোন যন্ত্রণায় আপনারা আমাকে ভোটে নির্বাচিত করেছেন, তা আমি বুঝি। গত ৯ বছর আমি, যদি আমার ইমানি দায়িত্ব পালন করে থাকি, তাহলে আমাকে ভোট দেবেন না কেন? আমি আমার ইমানি দায়িত্ব পালন করেছি, আপনারা ভোট দিয়ে আপনাদের ইমানি দায়িত্ব পালন করবেন।’ গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ফরিদপুরের ভাঙ্গার নূরাল্লাগঞ্জ ইউনিয়নে একটি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী জাফর উল্যাহর উদ্দেশে সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান বলেন, ‘গত চার বছর বন্যায় ও করোনায় এক ছটাক চাল নিয়াও কাজী জাফর উল্যাহ এলাকায় আসেন নাই। বিপদের দিনে আসেন নাই। চার বছর পর আপনি আইসা বলেন বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্রকে থুতু মারি। আমাকে থুতু মারা মানে এই এলাকার সব মানুষকে থুতু মারা। আমাকে থুতু মারার অধিকার কাজী জাফর উল্যাহর নাই।’ তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ আমি না আপনি তা এলাকার মানুষ জনে। পানামা ব্যাংকে টাকা কে পাচার করেছে, তা–ও সাধারণ মানুষ জানে। আর আপনি কিনা আমাকে বলেন বাটপার।’

মজিবুর রহমান বলেন, ‘আপনারা আমার জন্য আমাকে ভোট দিয়েন না, আপনারা আপনার সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভাইবা ভোট দেন। কাজী জাফর উল্যাহর উচিত ছিল এলাকায় এসে মানুষের কাছে মাফ চাওয়া। কিন্তু তিনি তা না কইরা মঞ্চে দাঁড়াইয়া যদি গাইলায় তাহলে কি ভোট পাবেন?’

অনুষ্ঠানে নূরাল্লাগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনায়েত শরিফ ও ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকেরা নিক্সন চৌধুরীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফরিদপুর গ্রাস রুট নামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা সহিদুল চৌধুরী। নূরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহিনুল ইসলাম, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম প্রমুখ।

সভায় ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক, সহসভাপতি সাকলাই কাজী, শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক জামাল হোসেন মিয়া, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দীপক মজুমদার, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক ফাইজুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামানকে নিয়েও বক্তৃতায় বিষোদ্‌গার করেন সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান।

মজিবুর রহমানের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিনি (নিক্সন) একজন মানসিক রোগী। ফরিদপুর-৪–এ নৌকার গণজাগরণ দেখে তাঁর মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। তাই আবোলতাবোল বকছেন। উনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা বলেন, অথচ নেত্রীর সব সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে নৌকার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। আমরা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে এ ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি। আমরা আশা করছি, কেন্দ্র তা বিবেচনা করবে। তিনি কাউকে সম্মান জানান না। দাম্ভিকতায় ওনাকে পেয়ে বসেছে।’