গৌরনদীতে তিন শিশুর শরীরে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন প্রয়োগ, তদন্ত কমিটি গঠন
বরিশালের গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সদের বিরুদ্ধে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত তিন শিশুর শরীরে মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন প্রয়োগ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ওই তিন শিশু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এই ঘটনা তদন্তে গতকাল শনিবার তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ।
ওই তিন শিশু হচ্ছে উপজেলার বেতগর্ভ গ্রামের তসলিম বালীর ছেলে তাসিন বালী, পৌর এলাকার শাওড়া গ্রামের গোপাল চন্দ্রের ছেলে সুব্রত ও বিল্বগ্রাম এলাকার শাওন হোসেন তালুকদারের ছেলে আয়ান।
উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের বেতগর্ভ গ্রামের বাসিন্দা তসলিম বালী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ৯ মাস বয়সী ছেলে তাসিন বালী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে গত শুক্রবার সকালে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি করি। গতকাল দায়িত্বরত নার্স শিশু তাসিনের শরীরে একটি স্যালাইন পুশ করলে তার (তাসিন) হাত-পা ফুলে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে দেখতে পাই তাসিনের শরীরে মেয়াদোত্তীর্ণ ডায়রিয়ার স্যালাইন পুশ করেছেন নার্সরা।’ তিনি আরও বলেন, হাসপাতাল থেকে যে স্যালাইন পুশ করা হয়েছে, তার মেয়াদ ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ছিল। অর্থাৎ ওই স্যালাইনের মেয়াদ এক মাস আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল।
পৌর এলাকার শাওড়া গ্রামের বাসিন্দা গোপাল চন্দ্র কান্দিলাল বলেন, ‘তাঁর দেড় বছর বয়সী শিশু সুব্রত কান্দিলাল ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে গত বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি করি। শুক্রবার দুপুরে সুব্রতের শরীরে স্যালাইন পুশ করার পর তার হাত-পা ফুলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে জানা যায়, সুব্রতের শরীরেও মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন পুশ করেছেন নার্সরা।
মাহিলাড়া ইউনিয়নের বিল্বগ্রাম এলাকার শাওন হোসেন তালুকদার। তিনি বলেন, ‘আমার চার বছর বয়সী শিশু আয়ানের শরীরেও মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন পুশ করা হয়েছে।’
তবে ওই শিশুদের শরীরে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন প্রয়োগ করার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের নার্স ইনচার্জ দুলুফা খানমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলহাজ মনিরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি জানার পরপরই ঘটনার তদন্তে বিপুল বিশ্বাসকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে সাত কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরই দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ তিন শিশু বর্তমানে সুস্থ আছে।