চট্টগ্রামে গরিব বেশি আনোয়ারায়, কম ডবলমুরিংয়ে

চট্টগ্রাম নগরফাইল ছবি

চট্টগ্রামের সবচেয়ে বেশি দারিদ্র্যের হার আনোয়ারা উপজেলায়। জেলার ১৫টি উপজেলা ও ১৫টি থানার মধ্যে এই উপজেলায় দারিদ্র্যের হার ৩৪ দশমিক ৩০ শতাংশ। অর্থাৎ আনোয়ারা উপজেলার প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৩৪ জনের বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে বা ‘গরিব’। আনোয়ারার মোট জনসংখ্যা ৩ লাখ ১১ হাজার ৪৫৮ জন।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের দারিদ্র্য মানচিত্র ২০২২’ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। দারিদ্র্য মানচিত্রের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, আনোয়ারা উপজেলার এক লাখের বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। এ মানচিত্রে দেশের সব জেলা, উপজেলা ও থানার দারিদ্র্য পরিস্থিতির তথ্য আছে।

মানচিত্রের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম জেলায় ধনী বেশি নগরের ডবলমুরিং থানায়। নগরের এই থানা এলাকায় প্রতি ১০০ জনের প্রায় ৯৯ জনই গরিব নন। ডবলমুরিং থানা এলাকার মোট বাসিন্দা ২ লাখ ৩৬ হাজার ৪৫৪ জন। এ থানায় কেবল ২ হাজার ৩৬৪ জন দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন।

বিবিএসের হিসাবে, দৈনন্দিন জীবনধারণে পণ্য ও সেবা কেনার জন্য একজন মানুষের প্রতি মাসে গড়ে ৩ হাজার ৮২২ টাকা খরচ করার সামর্থ্য যদি না থাকে, তাহলে তিনি দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবেন বা তাঁকে গরিব হিসেবে ধরা হবে। এর পাশাপাশি দারিদ্র্য পরিমাপে ১১৯ ধরনের বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় আনেন বিবিএস কর্মকর্তারা।

২০২২ সালের খানা আয় ও ব্যয় জরিপের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দারিদ্র্য পরিস্থিতি দেখানো হয়েছে বিবিএসের মানচিত্রে। এতে দেখা গেছে, ২০১০ সালের তুলনায় আনোয়ারা উপজেলায় দারিদ্র্যের হার বেড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ। সে সময় এ উপজেলার দারিদ্র্যের হার ছিল ১৯ দশমিক ৪ শতাংশ। অন্যদিকে ডবলমুরিং থানার দারিদ্র্যের হারও বেড়েছে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ।

জেলার ১৫ উপজেলার মধ্যে মিরসরাই উপজেলায় দারিদ্র্যের হার ২৫ শতাংশ ও বাঁশখালীতে ২১ দশমিক ৪ শতাংশ। নগরের আকবরশাহ ও কর্ণফুলী থানা ছাড়া বাকি সব থানায় দারিদ্র্যের হার ১ দশমিক ১ থেকে ৮ দশমিক ৯ শতাংশের মধ্যে। আকবরশাহ থানায় প্রতি ১০০ জনের ১২ জনের বেশি এবং কর্ণফুলীতে ১৫ জনের বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন।

দারিদ্র্য মানচিত্র প্রকাশ উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এই মানচিত্রের মাধ্যমে দেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়ের দারিদ্র্য পরিস্থিতির বিশদ চিত্র পাওয়া যায়। এতে নীতিনির্ধারকদের উন্নয়ন প্রকল্প ও সামাজিক কর্মসূচি নিতে সুবিধা হয়।