মায়ের চিকিৎসার টাকা ভুলে অন্যের বিকাশে, ফেরত পেলেন যেভাবে

মায়ের চিকিৎসার টাকা ভুলে অন্যের বিকাশ নম্বরে চলে যায়। পুলিশের সহায়তায় সেই টাকা ফেরত পান ভ্যানচালক মন্টু মণ্ডল। রোববার দুপুরে রাজবাড়ী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

ভ্যানচালক মন্টু মণ্ডলের মা অসুস্থ। চিকিৎসার জন্য টাকা প্রয়োজন। প্রবাসী ভাইকে ফোন করে টাকা চান। ভাইও টাকা পাঠান। কিন্তু একটি ডিজিটের ভুলে সেই টাকা চলে যায় ময়মনসিংহের ভালুকার এক ব্যক্তির নম্বরে। পরে পুলিশের সহায়তায় সেই টাকা ফেরত পেয়েছেন মন্টু মণ্ডল।

ভ্যানচালক মন্টু মণ্ডলের বাড়ি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের চরঘিকমলা গ্রামে। আজ রোববার দুপুরে খোয়া যাওয়া ২৬ হাজার ২৫০ টাকা পুলিশ তাঁর হাতে তুলে দিয়েছে।

পুলিশ ও মন্টু মণ্ডল জানান, ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন মন্টু। কয়েক দিন আগে মায়ের চিকিৎসার জন্য টাকার প্রয়োজন পড়লে কোনো উপায় না পেয়ে তিনি প্রবাসী ভাইয়ের কাছে ফোন করেন। তিনি বিদেশ থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠান। টাকা পাঠানোর পর নিশ্চিত হতে মন্টুকে ফোন করেন। কিন্তু মন্টু টাকা পাননি বলে জানান। তখন বিকাশ নম্বর মিলিয়ে দেখতে পান, একটি ডিজিট ভুল। এতে টাকা চলে যায় ময়মনসিংহের ভালুকায়। এ সময় তিনি ওই ব্যক্তিকে ফোন করে টাকা ফেরত পাঠানোর অনুরোধ করলে ওই ব্যক্তি ফোন বন্ধ করে দেন।

এ বিষয়ে সহায়তার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের একটি গ্রুপে পোস্ট করেন ওই প্রবাসী এবং পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিমের চেষ্টায় ভালুকা থানার পুলিশের সহায়তায় ওই টাকা উদ্ধার করা হয়। রোববার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ভ্যানচালক মন্টু মণ্ডলের কাছে সেই টাকা হস্তান্তর করা হয়। এ সময় পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইফতেখারুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মন্টু মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। ২৬ হাজার টাকা আমার কাছে অনেক। মায়ের চিকিৎসার জন্য টাকা খুবই প্রয়োজন ছিল। আমার ভাই চিকিৎসার জন্য টাকা পাঠান। কিন্তু অন্যের নম্বরে টাকা চলে যায়। খুব ভেঙে পড়েছিলাম। এই টাকা ফেরত পাব ভাবিনি। কিন্তু অবশেষে ফেরত পেলাম। আমি খুবই খুশি।’

পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, মায়ের চিকিৎসার টাকার বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে ওই ব্যক্তির অবস্থান শনাক্ত করে। পরে টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। টাকা ফিরিয়ে দিতে পেরে তাঁদেরও খুবই ভালো লাগছে।