নোয়াখালীতে থানায় যুবলীগ কর্মী ও তাঁর ভাইকে নির্যাতনের অভিযোগ

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চর জব্বর থানার ওসির পিটুনির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন যুবলীগের কর্মী মো. পারভেজ। নির্যাতনের ফলে পিঠের কালশিটে দাগ দেখান তিনি
ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় ধানখেতে হাঁস যাওয়ার ঘটনায় দুই পক্ষের মারামারির জেরে যুবলীগের এক কর্মী ও তাঁর চাচাতো ভাইকে থানায় আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার রাতে চর জব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবপ্রিয় দাশ তাঁদের মারধর করেন বলে অভিযোগ যুবলীগের কর্মীর।

যুবলীগের কর্মীর নাম মো. পারভেজ (২৫)। তিনি চর জুবলী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চর কচ্ছপিয়া গ্রামের মো. সেলিমের ছেলে। ওই ওয়ার্ডে যুবলীগের কমিটিতে তিনি সভাপতি পদের প্রার্থী বলে জানিয়েছেন। পারভেজের সঙ্গে তাঁর চাচাতো ভাই এসএসসি পরীক্ষার্থী মো. হৃদয়কেও (১৭) থানায় নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তবে এই অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেছেন চর জব্বর থানার ওসি দেবপ্রিয় দাশ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘খেতে হাঁস যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে একটি মারামারির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে উভয় পক্ষকে থানায় ডেকে আনা হয়েছিল। পরে উভয় পক্ষ বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার কথা বলে থানা থেকে চলে যায়। থানায় কাউকে আটকে রেখে মারধরের প্রশ্নই ওঠে না।’

মো. পারভেজ প্রথম আলোকে বলেন, শুক্রবার ধানখেতে হাঁস যাওয়ার ঘটনার জেরে তাঁর চাচা আবু জাফরের সঙ্গে প্রতিপক্ষ ইমাম উদ্দিনের কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। তিনি তখন ঘটনাস্থলেও ছিলেন না। পরে বিকেলে চর জব্বর থানার একদল পুলিশ তাঁকে উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সামনে থেকে এবং তাঁর চাচাতো ভাই মো. হৃদয়কে স্থানীয় একটি পাম্পের সামনে থেকে ধরে নিয়ে যায়। তাঁর অভিযোগ, শুক্রবার সারা রাত এবং পরদিন শনিবার সারা দিন তাঁদের থানার হাজতে আটকে রাখা হয়। পরে বিকেলে একই এলাকার ইউপি সদস্য থানায় গিয়ে টাকাপয়সা দিয়ে তাঁদের ছাড়িয়ে আনেন। থানার ওসি দেবপ্রিয় দাশ তাঁর কক্ষে তাঁদের দুই ভাইকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান। নিজেকে যুবলীগের নেতা পরিচয় দেওয়ার পর তাঁকে ছাত্রদলের কর্মী বলে আখ্যায়িত করেন ওসি।

পারভেজ আরও দাবি করেন, তাঁরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা না নিয়ে পুলিশ এবং প্রতিপক্ষের লোকজনের ভয়ে ঢাকায় গিয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। তাঁদের শরীরে এখনো পিটুনির দাগ আছে।

থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পারভেজ ও তাঁর চাচাতো ভাইসহ ছয়জনের নামে তাঁদের প্রতিবেশী ইমাম উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় যে লিখিত অভিযোগ করেছেন, সেটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়নি। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ইমাম উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ওসি দেবপ্রিয় দাশ বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর উভয় পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছিল। উভয় পক্ষের লোকজনই থানায় এসে বিষয়টি নিজেদের মধ্যে বসে মীমাংসার কথা বলেছেন। তাই মামলা রেকর্ড করা হয়নি।