নরসিংদীর শিবপুরে স্থানীয় সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূঁইয়ার ব্যক্তিগত কার্যালয় আগুনে পুড়ে গেছে
ছবি: প্রথম আলো

নরসিংদীর শিবপুরে স্থানীয় সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূঁইয়ার ব্যক্তিগত কার্যালয় আগুনে পুড়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। কার্যালয়টি উপজেলা আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে আসছিল।

ঠিক কীভাবে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল, তা নিশ্চিত হতে পারছেন না কেউ। ফায়ার সার্ভিস বলছে, আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে, তা তদন্ত শেষ হওয়ার পরই বলা যাবে। অন্যদিকে সংসদ সদস্য পক্ষের নেতা-কর্মীদের ধারণা, সম্প্রতি উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খানকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনার জেরে দুর্বৃত্তরা এই আগুন লাগিয়ে থাকতে পারে।

ফায়ার সার্ভিস বলছে, গতকাল রাত একটার আগে উপজেলা আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত টিনশেড ভবনটি আগুনে দাউ দাউ করে পুড়তে দেখেন স্থানীয় লোকজন। রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে খবর পেয়ে শিবপুর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা একটি ইউনিট নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। অগ্নিনির্বাপণ কাজ শুরু করার ১৩ মিনিট পর রাত ১টা ১৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এর মধ্যেই ভেতরে যা যা ছিল, সবই আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে। পরে রাত ২টা ৩০ মিনিটে অগ্নিনির্বাপণ কাজ শেষ করে ফেরেন তাঁরা। তবে কী কারণে এই অগ্নিকাণ্ড, তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি তাঁরা।

রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম, জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) মো. আবুল কালাম আজাদ ও শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম ভূঁইয়াসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক নেতা-কর্মী।

জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘স্থানীয় সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূঁইয়ার ব্যক্তিগত ওই কার্যালয় আমরা উপজেলা আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করে আসছি। গতকাল রাতে ওই কার্যালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ নেতা-কর্মীদের ব্যবহৃত চেয়ার, শতাধিক প্লাস্টিকের চেয়ার, একটি কম্পিউটার, কিছু টেবিল, কাগজপত্র, অব্যবহৃত পোস্টার এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর বেশ কিছু ছবি পুড়ে ছাই হয়েছে।’

শামসুল আলম ভূঁইয়া আরও বলেন, ‘এই কার্যালয় থেকেই বিভিন্ন দলীয় কার্যক্রম ও মিটিং-মিছিল করা হচ্ছিল। এ ছাড়া গত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করেছি আমরা, তাই এটি আমাদের একটি আবেগের জায়গা। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যদি কেউ জড়িত থাকেন, তাঁদের আইনের আওতায় আনুক পুলিশ, এটাই চাই আমরা।’

এ বিষয়ে নরসিংদী ফায়ার সার্ভিসের ডিএডি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘কীভাবে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত, তা নিশ্চিত হতে আমরা একটি কমিটি করেছি। তদন্ত শেষে ওই কমিটির প্রতিবেদন হাতে পেলে এ বিষয়ে বলা যাবে। তবে কার্যালয়টির ভেতরে থাকা সবকিছুই পুড়ে ছাই হয়েছে।’

শিবপুর থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হওয়া ওই আওয়ামী লীগের কার্যালয়টি আমরা পরিদর্শন করেছি। কোনো দুর্বৃত্ত এই ঘটনা ঘটিয়েছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে আমরা এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।’