ঝিনাইদহে জামায়াতের কার্যালয়ে মিলল সরকারি অনুদানের সার ও বীজ

ঝিনাইদহ জেলার সুরাট ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া সার ও বীজ
ছবি: প্রথম আলো

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সুরাট বাজারে ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর কার্যালয় থেকে সরকারি প্রণোদনার সার ও বীজ উদ্ধার করেছে কৃষি বিভাগ। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে খবর পেয়ে ৮ প্যাকেট শর্ষেবীজ, ৫ বস্তা ডিএপি সার, ৫ বস্তা পটাশ, ৮ কেজি শর্ষে ও ১৯ কেজি মসুরবীজ উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী মঞ্জুরুল ইসলাম জোয়ারদার জানান, শুক্রবার রাতে জামায়াতের সাইনবোর্ড লাগানো অফিসে সরকারি সার ও বীজের মজুত দেখতে পেয়ে স্থানীয় জনতা ভিড় জমায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. জুনায়েদ হাবীব ও সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদুল লতিফ। তাঁরা ইউনিয়ন জামায়াত কার্যালয়ে সার ও বীজের মজুদ দেখতে পান এবং উদ্ধার করে ঝিনাইদহে নিয়ে আসেন।

এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি ইকবাল হোসেন, ৬ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা বিল্লাল হোসেন, কৃষক নাসির মণ্ডল, স্থানীয় বাসিন্দা লিয়াকত আলী, পাতা জোয়ারদার, আলম লস্কর প্রমুখ।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা নূর এ নবী জানান, কৃষকের জন্য বরাদ্দ করা সার বা বীজ রাজনৈতিক কার্যালয়ে মজুত রাখার কোনো নিয়ম নেই। কৃষকেরা গত বুধবার উপজেলা পরিষদ থেকে প্রণোদনার সার ও বীজ গ্রহণ করেন। এ সময় তাঁরা সাক্ষর করে বীজ ও সার নিয়েছেন। এগুলো ১২ জন কৃষককে দেওয়া হয়েছে। সেই সার ও বীজ একটি রাজনৈতিক দলের অফিসে পাওয়া গেছে। এগুলো কার নামে বরাদ্দ ছিল এবং সেগুলো ওই স্থানে কীভাবে গেল, তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা জামায়াতের আমির হাবিবুর রহমান বলেন, এই সারগুলো কৃষকেরা জামায়াতের অফিসে রেখে গেছেন। অন্যরা তাঁদের সার ও বীজ নিয়ে গেলেও ৩০ জন কৃষক গতকাল নিতে না পেরে জামায়তের অফিসে রেখে যান। আজ তাঁদের নেওয়ার কথা। এরই মধ্যে বিএনপির নেতা বিল্লাহ হোসেন লোকজন নিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। এই সারগুলো আত্মসাৎ কিংবা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে রাখা হয়নি বলে তিনি দাবি করেন। তাঁর অভিযোগ, জামায়াতের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রতিপক্ষ অপপ্রচার করতে এসব করছে।

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন জানান, দলীয় অফিসে সরকারি বীজ ও সার রাখার নিয়ম যদি থাকে তবে সমস্যা নেই। আর যদি না থাকে তবে কৃষি বিভাগ আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে। এলাকার মানুষ এগুলো দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে জানালে তিনি বিষয়টি কৃষি বিভাগকে জানিয়েছেন।