শ্রেণিকক্ষে হিজাব-নিকাব খুলতে বাধ্য করার অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে

ছাত্রী হেনস্তার প্রতিবাদে মানববন্ধন। আজ বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রিয় গ্রন্থাগারের সামনেছবি: প্রথম আলো

শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীদের হিজাব-নিকাব খুলতে বাধ্য করা ও কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মেসেঞ্জারে ‘অপ্রীতিকর বার্তা’ পাঠিয়ে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

আজ সোমবার বেলা তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এ অভিযোগ করা হয়।

কর্মসূচি থেকে ওই শিক্ষককে পাঠদান থেকে অব্যাহতি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া দুই দিনের মধ্যে দাবি আদায় না হলে বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে তীব্র আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন তাঁরা। ফোন না ধরায় অভিযোগের বিষয়ে ওই শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ’-এর ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী বলেন, ক্লাসে গরম লাগার কারণে তিনি ছোট একটি কাগজ দিয়ে নিজেকে বাতাস করছিলেন। এ সময় ওই শিক্ষক তাঁকে দাঁড় করিয়ে বলেন, ‘এটা কী করছো? এটা তো খুবই দৃষ্টিকটু। এ রকম প্যাকেটের মতো পোশাক পরে আসলে তো গরম লাগবেই। তোমার গরম তোমার কাছেই রাখো।’

ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, আরেকদিন তাঁর এক বান্ধবী ক্লাসে জোরে উপস্থিতি দিলেও তিনি (শিক্ষক) না শোনার অজুহাত দিয়ে জোরপূর্বক নিকাব খুলিয়েছেন। এ ছাড়া আরেক বান্ধবীর নিকাব নিয়ে কটুক্তি করেছেন।

একই বিভাগের মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ইসলামিক স্টাডিজের মতো বিভাগের শিক্ষক হওয়া সত্ত্বেও তিনি আমাদের বোনকে হিজাব খোলার মতো কথা বলেন।’ তিনি ক্লাসে এসে ছাত্রীদের বলেন, ‘তোমরা কেন হিজাব পরে আসো? তোমরা কি স্মার্ট হতে শিখনি।’ ছাত্রীদের হেনস্তা করায় ওই শিক্ষককে বিভাগ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান তিনি।

বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের বান্ধবী, বড় বোন ও ছোট বোনদের পর্দার অধিকার নিয়ে কটুক্তি করার প্রতিবাদে আজ রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। আমরা ব্যক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাসী, আমাদের বোনদের হিজাব পরার ব্যক্তিস্বাধীনতা রয়েছে। এই হিজাব নিয়ে কটুক্তি করে ব্যক্তিস্বাধীনতা হরণ করা চলবে না।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোহা. আশরাফ উজ জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আমার কাছে অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার একাডেমিক কমিটির মিটিংয়ে আলোচনা করা হবে।’