আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়ে ভোট গ্রহণে সমস্যা হবে না: গাজীপুরের রিটার্নিং কর্মকর্তা
দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়ে ভোট গ্রহণে সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম। আজ শনিবার দুপুরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল শুক্রবার রাতে দুর্বৃত্তরা তিনটি বিদ্যালয়ে আগুন দেয়। এর মধ্যে দুটি ভোটকেন্দ্র। ওই দুই বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষসহ সামান্য পুড়েছে। ইতিমধ্যে মেরামত করা হয়েছে। এতে ভোট গ্রহণে কোনো সমস্যা হবে না।
গতকাল রাতে গাজীপুর নগর ও কালিয়াকৈর উপজেলার তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে নগরের পূর্ব চান্দনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কালিয়াকৈর উপজেলার বাঁশতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভোটকেন্দ্র হিসেবে নির্ধারিত। আগুনে পুড়ে যাওয়া টিএনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত সিটি নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ছিল। তবে এবার সেটি ভোটকেন্দ্রের তালিকায় রাখা হয়নি। আগুনে চান্দনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকটি কক্ষ ও টিএনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯টি কক্ষ এবং বাঁশতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষ পুড়ে গেছে।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত পূর্ব চান্দনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে ভোটকেন্দ্রের কয়েকটি কক্ষ পুড়ে গেছে। অপর দিকে গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত টিএনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে জয়দেবপুর ফায়ার সার্ভিস ও গাজীপুর মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন। ততক্ষণে স্কুলের ৯টি কক্ষ পুড়ে যায়।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সিদ্দিক বলেন, দুটি বিদ্যালয়ের মধ্যে একটিতে ভোটকেন্দ্র রয়েছে। সেটির অফিসে থাকা কিছু বইখাতা পুড়ে গেছে। এতে খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। সেখানে ভোট গ্রহণে কোনো সমস্যা হবে না। তবে টিএনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেশি ক্ষতি হয়েছে। সেটিকে কেন্দ্র রাখা হয়নি।
অপর দিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ইউনিয়নের বাঁশতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা গিয়ে দেখেন, অফিসকক্ষ পুড়ে গেছে। এ ছাড়া অফিসকক্ষে থাকা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও অল্প কিছু নতুন বইও পুড়ে গেছে। খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম বলেন, আগুনে বিদ্যালয়টির অফিসকক্ষে টেবিল–চেয়ার ও কিছু বইখাতা পুড়েছে। শ্রেণিকক্ষগুলো অক্ষত রয়েছে। ফলে ওই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১ থেকে ১৮ নম্বর ওয়ার্ড ও কালিয়াকৈর উপজেলা নিয়ে গঠিত গাজীপুর-১ আসন। এবারের নির্বাচনে এখানে মোট সাত প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের আ ক ম মোজাম্মেল হক (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম (ট্রাক), বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের সফিকুল ইসলাম (ফুলের মালা), জাতীয় পার্টির এম এম নিয়াজ উদ্দিন (লাঙ্গল), বিএনএমের মো. আর্শেদুজ্জামান (নোঙ্গর), ইসলামী ঐক্যজোটের ফজলুর রহমান (মিনার), তৃণমূল বিএনপির চৌধুরী ইরাদ আহ্মদ সিদ্দিকী (সোনালী আঁশ)। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির নিয়াজ উদ্দিন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।