স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় লাখ লোক ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। এখনো হাসপাতালে ভর্তি আছেন প্রায় ১০ হাজার রোগী। গতকাল শনিবার দুই হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১৫ জন। তাঁরা তাঁদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
আজ রোববার দুপুরে সাভারের জিরানী এলাকায় বাংলাদেশ-কোরিয়া মৈত্রী হাসপাতালে একটি অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব তথ্য দেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের যৌথ উদ্যোগে সাহায্য সংস্থা কইকার (KOICA) সহযোগিতায় ‘চক্ষু স্বাস্থ্য প্রচার এবং বাংলাদেশের নির্বাচিত এলাকায় প্রতিকারযোগ্য অন্ধত্ব প্রতিরোধ’ প্রকল্প হস্তান্তর করা হয়। এর আগে বাংলাদেশ-কোরিয়া মৈত্রী হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার উদ্বোধন করেন মন্ত্রী।
ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কমাতে মশকনিধনই একমাত্র উপায় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘মশা নিধন করতে প্রতিটি জায়গায় স্প্রে করতে হবে। মশার বংশ বিস্তার রোধে পানি যেন জমে না থাকে, সে ব্যবস্থা করতে হবে, ময়লা পরিষ্কার রাখতে হবে। সারা দেশে সারা বছর এ কার্যক্রম চালাতে হবে। তবেই মশা কমবে, ডেঙ্গু রোগী কমবে, মৃত্যু কমবে। এর বাইরে আমাদের কিছুই বলার নেই। আমাদের কাজ চিকিৎসা দেওয়া। এর বাইরে আমরা সচেতনতামূলক বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছি।’
ডেঙ্গু চিকিৎসায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত স্যালাইন থাকলেও বাজারের জন্য সাত লাখ স্যালাইন আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কী কাজ করে, সেটি আপনারা খুব ভালো জানেন। তাঁদের দায়িত্ব চিকিৎসা দেওয়া, তাঁরা সেটি দিচ্ছেন। তাঁদের দায়িত্ব ডাক্তার-নার্সদের ট্রেইন (প্রশিক্ষিত) করা। যাতে রোগীরা বেড পায়, ওষুধ ও স্যালাইন পায়। সেই কাজটুকু সফলতার সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় করে আসছে। বাইরে আমরা দেখলাম স্যালাইনের অভাব দেখা দিচ্ছে, যদিও আমাদের হাসপাতালে স্যালাইনের অভাব নেই। তারপরও আমরা সরকারিভাবে সাত লাখ স্যালাইন দ্রুত ইনপুট (আমদানি) করে আনার নির্দেশনা দিয়েছি। সেটির কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে স্যালাইন চলে আসবে। আর লোকাল স্যালাইন তো তৈরি হচ্ছে।’
২০১৪ সালে ‘চক্ষু স্বাস্থ্য প্রচার এবং বাংলাদেশের নির্বাচিত এলাকায় প্রতিকারযোগ্য অন্ধত্ব প্রতিরোধ’ প্রকল্পটি দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের ৯ দশমিক ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদানের অর্থায়নে এবং কোরিয়ার আন্তর্জাতিক সংস্থা (কইকা) দ্বারা বাস্তবায়িত হয়। প্রকল্পটি দেশে অপ্রয়োজনীয় অন্ধত্ব দূরীকরণে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সহযোগিতায় চক্ষু পরিচর্যার এ প্রকল্প আজ হস্তান্তর করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক, কইকার ভাইস প্রেসিডেন্ট লি ইয়ুন ইয়ং, কান্ট্রি ডিরেক্টর তাইয়ং কিম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।