ঈশ্বরগঞ্জে মহিলা আ.লীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে বাসা দখলের অভিযোগ

ঈশ্বরগঞ্জে বাসা দখলের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন। আজ শনিবার উপজেলার কাঁকনহাটি মহল্লায়
ছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে মহিলা আওয়ামী লীগের এক নেত্রীর বিরুদ্ধে বাসা দখলের অভিযোগ উঠেছে। নিজ বাড়িতে আজ শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে বাসার মালিক ইসহাক মিয়া ওই অভিযোগ করেন।

তবে বাসা দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে ওই নেত্রী প্রথম আলোকে বলেন, ইসহাক মিয়া তাঁর কাছে বাসা বিক্রির করার জন্য বায়নানামা চুক্তি করে টাকা নিয়েছেন। দেড় মাস আগে ইসহাকের ছেলে রুবেল তাঁর শিশুকন্যাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় তিনি গত ২১ ডিসেম্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। ওই মামলায় রুবেল এখন কারাগারে রয়েছেন। ওই মামলার পর থেকে ইসহাক তাঁর বিরুদ্ধে বাসা দখলের অভিযোগ করছেন।’

ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার কাঁকনহাটি মহল্লার বাড়িতে ওই সংবাদ সম্মেলন করেন ইসহাক মিয়া। সংবাদ সম্মেলনে ইসহাকের পক্ষে লিখিত বক্তব্য দেন তাঁর পুত্রবধূ মোছা. সাজমুন্নাহার। তিনি বলেন, পৌরসভার ধামদী মহল্লায় পাঁচ শতক জমির ওপর তাঁদের একটি পাকা বাসা রয়েছে। ২০১৮ সালে ওই নেত্রীর কাছে বাসাটি ভাড়া দেওয়া হয়। ভাড়ার কোনো লিখিত চুক্তিনামা ছিল না। তবে রসিদ মূলে ভাড়া আদায় করা হতো। ওই নেত্রী ২০২১ সাল থেকে বাসাভাড়া বন্ধ করে দেন। এর কিছুদিন পর থেকে বাসাটি তাঁর নিজের বলে দাবি করতে থাকেন তিনি।

সাজমুন্নাহার আরও বলেন, বাসাটি দখলমুক্ত করার জন্য তাঁর স্বামী রুবেল মিয়া (৩৮) বিভিন্নভাবে চেষ্টা করতে থাকেন। এতে ওই নেত্রী তাঁর স্বামীর প্রতি ক্ষুব্ধ হন। একপর্যায়ে ২১ ডিসেম্বর তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে ওই নেত্রী তাঁর (নেত্রী) শিশুকন্যাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। তাঁর স্বামী নির্দাষ। তারপরও তিনি ওই মামলায় বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

সাজমুন্নাহার আরও বলেন, ‘মামলাটি করা হয়েছে আমাদের ভয় দেখানোর জন্য। যাতে আমাদের পক্ষ থেকে বাসাটি দখলমুক্ত করতে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া না হয়।’
ইসহাক মিয়া বাসার দলিলপত্র ও ভাড়া আদায়ের রসিদ দেখিয়ে বলেন, ‘সবকিছু আমার পক্ষে থাকার পরও শুধু ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে আমার বাসাটি বেদখল করে নিয়েছে ওই মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী।’

ইসহাক মিয়ার সংবাদ সম্মেলনে ওই মহল্লার কাউন্সিলর মেহেদী হাসান, প্রতিবেশী অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক আবদুল জব্বারসহ এলাকার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার পর জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে ওই নেত্রী তাঁর নিজের কিছু অনুসারীদের নিয়ে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে ও ভেতরে মানববন্ধনের আয়োজন করেন। সেখানে তিনি বলেন, তাঁর দায়ের করা ধর্ষণ চেষ্টার মামলাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ইসহাক ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ওই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে নাটক করেছেন। নেত্রী দাবি করেন ইসহাক তাঁর কাছে বাসা বিক্রির বায়নানামা চুক্তি করে টাকা নিয়েছেন।

মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রীর মানববন্ধন কর্মসূচি চলার সময় সেখানে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি পীরজাদা মোস্তাছিনুর রহমানকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, তিনি অন্য কাজে উপজেলা পরিষদে এসেছিলেন। মানববন্ধন ও বাসা দখলের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না।