সংস্কারের পরই সড়ক বেহাল

বেহাল সড়কের সংস্কারকাজ চলছে। পাঁচ থেকে সাত দিন পরেই সেখানকার পিচ উঠে ভেঙে যাচ্ছে। সড়কের সংস্কার করা অংশে আবার মেরামত করতে হচ্ছে। এই চিত্র ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ-জীবননগর (ভায়া খালিশপুর) সড়কের। এক সপ্তাহ আগে শেষ হয়েছে ওই সড়ক উন্নয়নের কাজ। ইতিমধ্যে সড়কের অনেক স্থানের পিচ উঠে ভেঙে গেছে।

সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সড়কটিতে পিচ–পাথর দিয়ে কার্পেটিং করা হয়েছে। ১০ সেপ্টেম্বর কাজ শেষ করে ঠিকাদার যন্ত্রপাতি ও মালামাল ফেরত নিয়ে গেছেন। গত বুধবার থেকে সড়কটি বেহাল হতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু স্থানে পিচ-পাথর উঠে গেছে। ঠিকাদার জানিয়েছেন দ্রুত সড়কটি মেরামত করে দেবেন।

কালীগঞ্জ শহরের মেইন বাসস্ট্যান্ড থেকে একটি সড়ক চুয়াডাঙ্গা শহরে মিলেছে। এটি আঞ্চলিক মহাসড়ক। এই সড়ক দিয়েই যশোর-চুয়াডাঙ্গার যোগাযোগ চলে। এই সড়কের ঝিনাইদহ অংশে ১৫ কিলোমিটার ও চুয়াডাঙ্গা অংশে ১০ কিলোমিটার ওয়্যারিংকোর্স (অভারলে) করার সিদ্ধান্ত নেয় সড়ক বিভাগ। ৪০ মিলি কার্পেটিং করার কথা। পাশাপাশি সড়কে রঙের কাজ, পাশে পিলার স্থাপন ও মাটির কাজ রয়েছে। এই কাজে ১৭ কোটি ৩০ লাখ ৩২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কাজটি পায় মেহেরপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জহিরুল লিমিটেড। তবে কাজ করেছেন চুয়াডাঙ্গার রনজু আহম্মেদ। তিনি দাবি করেছেন, জহিরুল ইসলামের লাইসেন্স তিনি ব্যবহার করছেন।

গত আগস্ট মাসের শেষ দিকে ঝিনাইদহ অংশের কার্পেটিং কাজ শুরু হয়। পেভার মেশিনে কাজ করায় দ্রুত শেষ হয়েছে। ১০ সেপ্টেম্বর কাজ শেষ করেছেন ঠিকাদার। এখন পাশের মাটির কাজ, পিলার বসানো ও রঙের কাজ বাকি রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার গিয়ে দেখা যায়, অনেক সড়কের অনেকে স্থানে কার্পেটিং ফেটে গেছে। কাশিপুর, ঈশ্বরবা, পাতিবিলা এলাকার অনেক স্থানে পিচ-পাথর উঠে গেছে। ঈশ্বরবা এলাকার বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম বলেন, পায়ের আঙুল দিয়ে ঘষা দিলেই পাথর উঠে যাচ্ছে।

পাতিবিলা এলাকার বাসিন্দা আসলাম হোসেন বলেন, মানসম্পন্ন পিচ দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া ভালোভাবে কাজটিও করা হয়নি। এ কারণে কাজ শেষ হতে না হতেই পিচ-পাথর উঠে যাচ্ছে। স্থানগুলো এখন মেরামত করলেও সেটা হবে তালিপট্টি মারা, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

এ বিষয়ে ঠিকাদার রনজু আহম্মেদ বলেন, কাজটি তিনি খারাপ করেননি। কিন্তু পেভার মেশিনের কাজ হওয়ায় কয়েকটি স্থানে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। খারাপ হয়ে যাওয়া স্থানগুলোতে পেভার মেশিনের তেল পড়েছিল। তেল পড়া জায়গায় পিচ ধরেনি, এ কারণে উঠে যাচ্ছে। এক-দুই দিনের মধ্যে মেরামত করে দেবেন। তাঁকে সড়কটি তিন বছর দেখাশোনা করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে নষ্ট হলেই মেরামত করতে হবে। কাজ খারাপ করার সুযোগ নেই।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঝিনাইদহ কার্যালয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডি) মুকুল জ্যোতি বসু বলেন, সড়কের কয়েকটি স্থানে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে ঠিকাদারকে জানানো হয়েছে। তিনি মেরামত করবেন বলে জানিয়েছেন।