খুলনায় চলছে শিখো-প্রথম আলো কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা

শিখো-প্রথম আলো জিপিএ-৫ কৃতী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আসা শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস। আজ সকালে খুলনার আযম খান কমার্স কলেজ মাঠেছবি: সাদ্দাম হোসেন

সকাল সাড়ে আটটা বাজার আগেই শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে খুলনার আযম খান কমার্স কলেজের মাঠ। তাদের হইহুল্লোড়ে পুরো কলেজ ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ। সবার হাতে কৃতিত্বের সনদ আর ক্রেস্ট। সেগুলো নিয়েই তুলছে ছবি। ছোট ছোট দলে চলছে আড্ডা। স্কুলজীবনের কাছের বন্ধু ও সহপাঠীকে কয়েক মাস পরে দেখে জড়িয়ে ধরছে কেউ কেউ। আবার মুঠোফোনে সেলফি তুলে স্মৃতি ধরে রাখার চেষ্টা করছে অনেকেই। নির্দিষ্ট বুথের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে সংগ্রহ করছিল সকালের নাশতা।

আজ শনিবার সকালে এই চিত্র দেখা গেল খুলনায় অনুষ্ঠিত শিখো-প্রথম আলো জিপিএ-৫ কৃতী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। সংবর্ধনায় অংশ নিতে অনলাইনে নিজেদের নাম আগেই নিবন্ধন করেছিল ১ হাজার ৬০৬ শিক্ষার্থী। পর্যায়ক্রমে সারা দেশের ৬৪ জেলায় প্রথম আলোর আয়োজনে ও শিক্ষার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘শিখো’র পৃষ্ঠপোষকতায় কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হচ্ছে। এ আয়োজনে সহযোগিতা করছে ফ্রেশ, এটিএন বাংলা ও প্রথম আলো বন্ধুসভা।

সকাল ১০টায় খুলনা প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা জাতীয় সংগীত পরিবেশন শুরু করেন। এতে গলা মেলান শিক্ষার্থী ও অতিথিরা। খুলনা বন্ধুসভার সভাপতি তুহিন রায়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর খুলনা প্রতিনিধি উত্তম মণ্ডল।

অনুষ্ঠানে কৃতী শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা জোগাতে এরই মধ্যে সংবর্ধনা মঞ্চে উপস্থিত হয়েছেন আযম খান সরকারি কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ কার্তিক চন্দ্র মণ্ডল, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শেবেন্দ্র শেখর সিকদার, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাসুদুল আলম, আযম খান সরকারি কমার্স কলেজের সহযোগী অধ্যাপক তারক চাঁদ ঢালী, যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বিশ্বাস শাহীন আলম, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বর্ণকোমল রায়, প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ, প্রথম আলোর প্রশাসনিক প্রধান উৎপল চক্রবর্তী প্রমুখ।

খুলনা পর্বের সংবর্ধনায় অংশ নিতে অনলাইনে নিজেদের নাম আগেই নিবন্ধন করেছিল ১ হাজার ৬০৬ শিক্ষার্থী
ছবি: সাদ্দাম হোসেন

খুলনার রূপসা উপজেলা থেকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসেছে আলভী শেখ। ভীষণ উচ্ছ্বাস নিয়ে সে বলল, ‘এখানে আসব বলে খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠেছি। কখন আসব এখানে, সবার সঙ্গে দেখা হবে, সেই অপেক্ষা অবশেষে ফুরাল। আমাদের সবাইকে যেভাবে সম্মান দেওয়া হচ্ছে, সেটি অকল্পনীয়।’

অনুষ্ঠান শুরুর আগে থেকেই দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছিলেন না প্রথম আলোর আলোকচিত্রী সাদ্দাম হোসেন। একের পর এক শিক্ষার্থীদের ছবি তুলে দেওয়ার আবদার পূরণ করে যাচ্ছিলেন তিনি।

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার মিকসিমিল রুদাঘরা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী আঁখি সুলতানা, অর্পা কর্মকারসহ পাঁচ-ছয়জন ছবি তুলছিল। তারা বলছিল, ফলাফল প্রকাশের দিন জিপিএ-৫ পাওয়ার খবর পাওয়ার পর যেমন আনন্দ পেয়েছিল, এ অনুষ্ঠানে এসেও তেমন অনুভূতি হয়েছে তাদের। অনেক বন্ধুর সঙ্গে দেখা হচ্ছে এ জন্য আনন্দের মাত্রা বহুগুণ বেড়েছে।

জিপিএ-৫ পাওয়া ছেলে শেখ জুবায়ের আহমেদকে নিয়ে খালিশপুর এলাকা থেকে অনুষ্ঠানে এসেছেন আমেনা খাতুন। তিনি বলেন, এ ধরনের আয়োজনে এসে তাঁরও ভালো লাগছে। এখানে এসে বাচ্চারা আরও ভালো করার উৎসাহ পাবে।

মায়ের কথা শেষ হওয়ার আগেই জুবায়ের বলে ওঠে, ‘অনেক জায়গায় কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হচ্ছিল। কখন খুলনায় হবে, সেই অপেক্ষায় ছিলাম। বেশ ভালো লাগছে এই আয়োজনের অংশীদার হতে পেরে। এখানে এসে অনেক বড় মানুষের সঙ্গে মেশারও সুযোগ হয়েছে।’