সাঁতরে খাল পার হচ্ছিলেন মৌয়াল, পা টেনে নিয়ে গেল কুমির

সুন্দরবন
ফাইল ছবি

সুন্দরবন–পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জে কুমিরের আক্রমণে এক মৌয়াল নিহত হয়েছেন। আজ শনিবার দুপুরে বনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল খাল সাঁতরে পাড়ি দেওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় কুমির তাঁর পা ধরে টেনে নিয়ে চলে যায়। এর কয়েক ঘণ্টা পর তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত ব্যক্তির নাম মোশাররফ হোসেন গাজী (৫৫)। নিহত মোশাররফ হোসেন বনসংলগ্ন খুলনার দাকোপ উপজেলার ঢাংমারী গ্রামের আমির আলী গাজীর ছেলে।

বন বিভাগ সূত্র ও স্থানীয় লোকজন জানান, সুন্দরবন ও লোকালয়কে আলাদা করেছে ঢাংমারী নদী। এ নদী সাঁতরে আজ সকালে চার মৌয়াল মধু সংগ্রহের জন্য বনে ঢুকেছিলেন। প্রজনন মৌসুম বিবেচনায় এখন সুন্দরবনে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা চলছে। তাই ওই বনজীবীরা বন বিভাগের চোখ ফাঁকি দিতে সাঁতরে বনে ঢোকেন। সেখান থেকে ফেরার পথে করমজল খালে এ ঘটনা ঘটে। আজ দুপুরে মধু নিয়ে সাঁতার কেটে করমজল খাল পাড়ি দেওয়ার সময় কুমির মোশাররফের পা কামড়ে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। এর প্রায় দুই ঘণ্টা পর সঙ্গী ও স্থানীয় লোকজন ওই খাল থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করেন।

ঢাংমারী এলাকার বাসিন্দা মো. মাহাবুব হোসেন বলেন, মূলত বন বিভাগের কর্মীদের চোখ ফাঁকি দিতে তাঁরা নৌকা ছাড়াই সাঁতরে বনে ঢুকে যান। দুপুরে জোয়ার ছিল, তাই নদী-খালে পানিও ছিল অনেক বেশি। সাঁতরে খাল পাড়ি দিতে গিয়ে যখন কুমির আক্রমণ করে, তখন তাঁরা পায়ের নিচে মাটি পাননি। নৌকা নিয়ে বনে যেতে পারলে হয়তো তাঁদের এই বিপদ হতো না।

বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, সুন্দরবনের নদী-খালে মাছ এবং বনে প্রাণীদের বিচরণ ও প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায় ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাসের জন্য বনে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা চলছে। এই সময় মাছ, কাঁকড়া, মধু আহরণসহ সুন্দরবনে পর্যটকদের প্রবেশও নিষিদ্ধ।

সুন্দরবন–পূর্ব বন বিভাগের করমজল বন্য প্রাণী প্রজননকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, পাস-পারমিট না থাকলেও অবৈধভাবে ওই মৌয়ালেরা বনে এসেছিলেন। করমজল খাল পাড়ি দেওয়ার সময় কুমির তাঁদের ওপর আক্রমণ করে। তখন সঙ্গে থাকা তিনজন ডাঙায় উঠতে সক্ষম হলেও কুমির মোশাররফ হোসেনকে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়।