টেকনাফে সংঘর্ষে আহত আজিজুর ৩৮ দিন পর মারা গেছেন
কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলায় বিজিবির সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত আজিজুর রহমান (৫১) ৩৮ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা গেছেন। নিহত আজিজুর রহমান টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজারের বাসিন্দা ও সৈয়দ আহমেদের ছেলে।
আজ বৃহস্পতিবার ভোর চারটার দিকে উপজেলার হ্নীলার মৌলভীবাজারের নিজ বাড়িতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বেলাল উদ্দিন।
বেলাল উদ্দিন বলেন, গত ৯ জুন মৌলভীবাজার এলাকায় বিজিবির সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত হয়েছিলেন আজিজুর। এর পর থেকে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ১৬ জুলাই বুধবার তিনি হাসপাতাল থেকে বাড়িতে চলে আসেন।
বেলাল উদ্দিন আরও বলেন, ওই দিনের সংঘর্ষে আজিজুর রহমানসহ আরও ১২ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিরা বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। কিন্তু আজ ভোরে আজিজুর রহমান মারা যান। দুপুরের দিকে টেকনাফ থানা-পুলিশ আজিজুর রহমানের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে নিয়ে গেছে।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের পক্ষে বিষয়টি তাঁকে জানানো হয়। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গত ৯ জুন টেকনাফের হ্নীলায় বিজিবি জাহাঙ্গীর আলম নামের এক জেলেকে আটক করে নিয়ে গেলে ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকার লোকজন টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ৪ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় বিজিবির সঙ্গে সড়কে অবস্থানকারীদের সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষে আজিজুর রহমানসহ ১২ জন গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় পরদিন বিজিবি বাদী হয়ে ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে।
জাহাঙ্গীরকে আটকের পরদিন ১০ জুন বিজিবির উখিয়া ৬৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, জাহাঙ্গীর আলম মানব পাচারকারী ও মাদক চোরাকারবারি। বিজিবি সদস্যদের ওপর হামলার অভিযোগে এর আগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। তাঁকে আটক করার পর ছিনিয়ে নেওয়া চেষ্টা চালায় তাঁর আত্মীয়-স্বজনেরা। এ সময় বিজিবির সদস্যদের ওপরও হামলা করা হয়। আত্মরক্ষার্থে বিজিবি সদস্যরা ফাঁকা গুলি ছোড়েন। হামলায় উখিয়া ব্যাটালিয়নের উপ–অধিনায়কসহ ১০ জন বিজিবি সদস্য আহত হন। পরে আহত বিজিবি সদস্যদের উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
ঘটনার পর এই ঘটনায় আজিজুর রহমানের স্ত্রী মরজিনা আকতার বাদী হয়ে ৭ জুলাই আদালতে মামলা করেন। সেখানে বিজিবির সদস্যসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচার অভিজিৎ চৌধুরী এটি আমলে নিয়ে থানায় মামলা হয়েছে কি না জানতে চেয়ে টেকনাফ থানাকে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, আদালতের নির্দেশ মতে এ–সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। তবে প্রতিবেদনে কী আছে সেটি জানাননি তিনি।