বরিশালে গণ অধিকার পরিষদের বিভাগীয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব নুরুল হক। শনিবার দুপুরে নগরের আমতলা এলাকার একটি কনভেনশন সেন্টারে
ছবি: প্রথম আলো

গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক বলেছেন, দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসন থেকে মুক্তি চায়। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আওয়ামী লীগকে শান্তিপূর্ণভাবে বিদায় নিতে হবে। অন্যথায় শ্রীলঙ্কার স্বৈরশাসকের মতো আওয়ামী লীগ সরকারের পরিণতি বহন করতে হবে।

আজ শনিবার বিকেলে বরিশাল নগরের আমতলা এলাকায় একটি কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত গণ অধিকার পরিষদের বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই ভিপি।

নুরুল হক বলেন, ‘বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের আর মামলা-হামলা করে হয়রানি করবেন না। তাহলে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। জনগণকে বলব, অন্যায়ভাবে যদি পুলিশ একজনকেও গ্রেপ্তার করে, এলাকার সবাইকে নিয়ে থানা ঘেরাও করবেন। অনেক হয়েছে আর ছাড় দেবেন না।’

১৩ বছরে সরকারি দলের নেতা-কর্মীরা ১৪ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছেন অভিযোগ করে গণ অধিকার পরিষদের এই সদস্যসচিব বলেন, ‘কয়েক দিন আগে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশে দুর্ভিক্ষ আসছে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলব, এর আগে আপনি উন্নয়নের মহাসড়কের কথা বলেছেন—এখন কেন দুর্ভিক্ষের কথা বলছেন? মাত্র ৪৭ হাজার কোটি টাকা ঋণের জন্য আইএমএফের পা ধরাধরি শুরু করেছেন। অথচ ফরিদপুরের একজন ছাত্রলীগ নেতা ১০ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন। এই সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট একজন পি কে হালদার ১০ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন।’

নুরুল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ২৩ বছরের ইতিহাস, অত্যাচার-নিপীড়ন-শোষণের ইতিহাস। আমরাও তেমনি বলতে পারি, আওয়ামী লীগের ১৩ বছরের ইতিহাস গুম-খুন-হত্যা-চাঁদাবাজি–নৈরাজ্যের ইতিহাস। আজ বাংলার মানুষ আওয়ামী দুঃশাসন থেকে মুক্তি চায়। গুম-খুন থেকে মুক্তি চায়। বাংলার মানুষ তাঁর ভোটাধিকার ফেরত চায়।’

গত ১৩ বছরে রোহিঙ্গাদের মতো দেশের মানুষের ভোটাধিকার সরকার কেড়ে নিয়েছে বলে মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুরুল হক। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘২০১৪ আর ২০১৮ সালের মতো বাটপারির নির্বাচন এই সরকার আর করতে পারবে না। যদি সরকার তেমনটা করার চেষ্টা করে আমরা তাদের প্রতিহত করব।’

গণ অধিকার পরিষদের বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়ক বিপ্লব কুমার পোদ্দারের সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সভায় বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা এবং কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন।

দুপুর ১২টার দিকে আমতলা মোড়ের একটি কনভেনশন সেন্টারে সভা শুরু  হয়। বিকেলে সেখানে নেতা-কর্মীদের স্থান সংকুলান না হলে সামনের সড়কে কয়েক হাজার নেতা-কর্মীর উদ্দেশে বক্তব্য দেন নুরুল হক।