দেবীদ্বারে পুকুরপাড়ে খোঁড়া ১৬টি কবর নিয়ে কৌতূহল

কুমিল্লা জেলার মানচিত্র

কুমিল্লার দেবীদ্বার পৌর এলাকার মোল্লাবাড়ির পুকুরপাড়ে খোঁড়া ১৬টি কবর নিয়ে এলাকায় কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। ১৮ আগস্ট এ কবরগুলোর বিষয়ে জানতে পারেন স্থানীয় লোকজন। রমিজ উদ্দিন মোল্লা নামের এক ব্যক্তি গত রোববার বিকেলে কবরগুলো কার তা শনাক্ত করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে (ইউএনও) লিখিত আবেদন করেন।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) আহ্বায়ক, পৌর উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা ও উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারকে সদস্য করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ইউএনও কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়। আজ সোমবার রাতে ইউএনও প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

খবর পেয়ে সোমবার বিকেলে পুলিশ ওই স্থান পরিদর্শন করে। পুলিশ কবর দেখে ধারণা করছে, এগুলো বেশি পুরোনো নয়। দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, সোমবার বেলা দুইটায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ কবরগুলোর রহস্য উদ্ঘাটনে ইউএনও তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। প্রতিবেদন পেলে রহস্য উদ্ঘাটিত হবে।

মোল্লাবাড়ির বাসিন্দা রমিজ উদ্দিন মোল্লা বলেন, তাঁর বাড়ির কবরস্থান যৌথ মালিকানাধীন জমির ওপর নির্দিষ্ট করা আছে। কবরস্থানের পাশে তাঁর প্রায় ২ শতাংশ জমি আছে। পুকুরপাড়ের ওই জমিতে আগে কোনো কবর ছিল না। ১৮ আগস্ট হঠাৎ সেখানে সারিবদ্ধ ১৬ কবর দেখেন। কে বা কারা তাঁর জমির সীমানাপ্রাচীর ভেঙে সারিবদ্ধভাবে ১৬টি নতুন কবর তৈরি করে রেখেছেন।

রমিজ উদ্দিন মোল্লা আরও বলেন, ‘আমার ৬৫ বছর বয়সে এলাকার কাউকে কবরস্থানের বাইরে কবর দিতে দেখিনি। তাই আমি তাদের পরিচয় শনাক্তের জন্য আবেদন করেছি।’

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, পুকুরপাড়ের ওই জায়গায় লোকজন কম যাতায়াত করেন। তবে রাতারাতি এতগুলো কবর খোঁড়া হলো, তাঁরা কেউ বুঝলেন না, কিছু দেখলেন না। বিষয়টা তাঁদের কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে।

প্রবীণ ব্যবসায়ী আবদুল লতিফ মোল্লা বলেন, ‘৪০ বছর আগে মোল্লাবাড়ির পুকুরপাড়ের জমি কিনে বিপণিবিতান করেছি। আমার মার্কেটের পাশে হঠাৎ এতগুলো নতুন কবর দেখে শঙ্কিত হয়ে পড়ি। কারা মারা গেলেন, কারা কবর দিলেন? জানাজা, মৃত্যুর বিষয়ে প্রচার-প্রচারণার সংবাদও পাইনি। এ কারণে সন্দেহ হচ্ছে।’

তবে মোল্লাবাড়ির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, এটি ২০০ বছরের পুরোনো কবরস্থান। ১৮ শতক জায়গা নিয়ে কবরস্থান। এখানে নতুন কোনো কবর নেই। তিনি তাঁর স্বজনদের কবরগুলো মাটি দিয়ে উঁচু করেছেন। তবে নজরুলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রমিজ উদ্দিন মোল্লা বলেন, আগে এ জমিতে কারও কবর ছিল না।

ইউএনও নিগার সুলতানা বলেন, বিষয়টি স্পর্শকাতর। তাই সহকারী কমিশনারকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন। দ্রুত সময়ে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। এরপর পরিচয় শনাক্ত হবে।