ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিখোঁজ প্রার্থীর স্ত্রীর সাক্ষাৎকার

আশপাশে সিভিল পোশাকে লোকজন ঘোরাফেরা করছে, ভয়ে বের হতে পারছি না

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির দলছুট নেতা ও আওয়ামী লীগের আশীর্বাদপুষ্ট নেতা উকিল আবদুস সাত্তারের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ। তিনি আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিক থেকে তিনি ‘নিখোঁজ’। বিষয়টি নিয়ে প্রথম আলো কথা বলেছে তাঁর স্ত্রী মেহেরুননিছা মেহেরীনের সঙ্গে।

প্রশ্ন :

আপনার স্বামীর কি কোনো খোঁজ পেলেন?

মেহেরুননিছা : না, এখনো কোনো খোঁজ পাইনি। আমার স্বামী চার দিন ধরে নিখোঁজ। আমি অসুস্থ হয়ে পড়ছি। কোনো কিছু ভেবে উঠতে পারছি না। কী করব, কীভাবে করব, বুঝতে পারছি না। স্বামী ফিরে আসবে—এ অপেক্ষা করছি। নির্বাচন কমিশন (ইসি) তো আমার স্বামীর খোঁজ করার জন্য প্রশাসন, পুলিশ ও নির্বাচন কর্মকর্তাকে বলেছে। ভোটের আগেই স্বামীর ফিরবে—এ আশায় আছি।

প্রশ্ন :

আপনার স্বামী যেহেতু নিখোঁজ, নির্বাচনের কী হবে?

মেহেরুননিছা : নির্বাচনে প্রার্থী আমার স্বামী। তার অনুমতি ছাড়া তো নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে পারি না। কর্মী-সমর্থকেরা শত বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও নির্বাচন চালিয়ে যাবেন বলে বলছেন। তাঁরাও বারবার আমার স্বামীর খোঁজ নিচ্ছেন।

প্রশ্ন :

স্বামীর অনুপস্থিতিতে নির্বাচনের কাজগুলো কীভাবে করছেন?

মেহেরুননিছা : আমি কোনো দিন নির্বাচন পরিচালনা করিনি। আমি কাউকে চিনিও না। কাজটি কীভাবে করতে হবে, সেটিও জানি না এবং বুঝতে পারছি না। কোনো কাজই হচ্ছে না। কারা কারা স্বামীর পক্ষে ছিলেন, জানি না। চিনিও না সবাইকে।

প্রশ্ন :

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে ১৩২টি কেন্দ্রে ৮২৬টি বুথ আছে। এজেন্ট নিয়োগ দিচ্ছেন কীভাবে এবং কাদের?

মেহেরুননিছা : কয়েক দিন আগেও চারজন মেয়ে এজেন্ট হতে চেয়েছিলেন। সোমবার এজেন্ট দিতে তাঁদের ফোন করেছি। তাঁরা আমার কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেছেন যে তাঁরা এজেন্ট হতে পারবে না। তাঁদের ভয় দেখানো হয়েছে। আমার মনে হয়, ভোটকেন্দ্রগুলোয় আমার স্বামীর প্রতীকের জন্য কোনো এজেন্টই থাকবে না। কেন্দ্রগুলো এজেন্টশূন্যই থাকবে। কোনো এজেন্টই খুঁজে পাচ্ছি না। কেউ ভয়ে এজেন্ট হতে চাইছেন না এখন। কোনো কর্মী-সমর্থক আমার বাসায় আসতে পারছেন না।

প্রশ্ন :

নিখোঁজের বিষয়ে প্রশাসন ও পুলিশের কাছে আপনি এখনো লিখিতভাবে না জানানোর কারণ কী?

মেহেরুননিছা : আমাকে নজরবন্দী করে রাখা হয়েছে। ভয়ে বাসা থেকে বের হতে পারছি না। সারা দিনই বাসার চারপাশে সিভিল পোশাকে বিভিন্ন লোকজন ঘোরাফেরা করছেন। ভিডিও করছেন। ছবি তুলছেন। কেউ ভয়ে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। ভয়-আতঙ্কে বাসা থেকে বের হতে না পারায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি।

প্রশ্ন :

তাহলে কি লিখিত অভিযোগ দেবেন না?

মেহেরুননিছা : স্বামী যেখানেই থাকুক, মঙ্গলবার সকালের মধ্যে তার ফেরা উচিত বা তাকে ফেরত পাঠানো উচিত। কারণ, সময় নেই। আমি মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত স্বামীর ফেরার অপেক্ষা করব। এর মধ্যে যদি না আসে, তাহলে আমি লিখিত অভিযোগ করব।