নীলফামারীতে মাঝারি তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ জনজীবন

নীলফামারীতে তিন দিন ধরে অসহনীয় গরমে অনেকটা ফাঁকা থাকছে পথঘাট। আজ শহরের বড় মসজিদ সড়কে তোলা
ছবি: প্রথম আলো

নীলফামারীতে আবারও বেড়েছে গরম। গত বৃহস্পতিবার থেকে জেলার ওপর দিয়ে বইছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। তিন দিন ধরে অব্যাহত প্রখর রোদ আর অসহনীয় গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সূর্যের উত্তাপ থাকায় খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে কেউ বের হচ্ছেন না। এ সময় ফাঁকা থাকছে শহর ও গ্রামের পথঘাট।

সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া কার্যালয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার জেলায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। আজ শনিবার দুপুর ১২টায় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বেলা ৩টায় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৩২ শতাংশ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, তাপমাত্রা যদি ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়, তবে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলে। ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বলা হয়। তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয় যখন তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। আর অতি তীব্র হয় ৪২ ডিগ্রি বা এর বেশি হলে। সে হিসাবে আজ নীলফামারীর ওপর দিয়ে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

আবহাওয়ার এমন বিরূপ প্রভাবে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন কৃষিশ্রমিক, রিকশাচালকসহ স্বল্প আয়ের মানুষজন। আজ দুপুরে শহরের বড় মসজিদ সড়কে কথা হয় রিকশাচালক মোকফার আলীর (৫৫) সঙ্গে। মোকফার আলীর বাড়ি জলঢাকা উপজেলার টেংগনমারী গ্রামে। তিনি বলেন, ‘সকাল আটটার সময় আইসচু, শহরত মাইনষি নাই, আর যে গরম পইরছে রিকশা চালায় কঠিন। অইন্য দিন এই সময় ৪০০ টাকা কামাই হয়, আইজ ২০০ টাকাও কামাই করির পারো নাই। গরমত টিকায় যায়ছে না।’

জেলা সদরের ইটাখোলা ইউনিয়নের সিংদই গ্রামের রিকশাচালক মিলন রহমান (৩৫) বলেন, ‘রোউদের জইন্য বাড়ি থাকি বেড়ায় যায়ছে না। এক ঘণ্টা আগত রিকশা নিয়া বেড়াইছু। রোউদের জইন্য শহরত মাইনষি নাই। এলাও ১০০ টাকা কামাই করির পারো নাই। এই গরমত হামার খুব কষ্ট হইছে।’

রামগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুলের শিক্ষক লিনা দে বলেন, প্রচণ্ড গরমের কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমেছে। রামগঞ্জ টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের প্রভাষক মো. আবদুল হান্নানও বলেন, কয়েক দিনের গরমে তাঁদের কলেজে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমে গেছে।

সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. লোকমান হাকিম বলেন, তিন দিন ধরে জেলায় তাপপ্রবাহ চলছে। আগামীকাল রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।  বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা কমে আসবে।