একই স্থানে সদ্য ঘোষিত কমিটি ও বিদায়ী কমিটির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, উত্তেজনা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানচিত্র

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্রদলের আংশিক আহ্বায়ক কমিটি গঠন নিয়ে উত্তেজনা দিন দিন বাড়ছে। গোলাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের পর এবার সদ্য বিদায়ী কমিটি ও সদ্য ঘোষিত নতুন কমিটির নেতারা একই স্থানে পৃথক পৃথক কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

আগামীকাল সোমবার সকালে শহরের লোকনাথ দীঘির পাড়ে (টেংকের পাড়) সদ্য ঘোষিত কমিটি আনন্দ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সদ্য বিদায়ী কমিটি পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে সীমাহীন লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহীনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামীর রাষ্ট্রনায়ক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের নতুন আহ্বায়ক কমিটি দিয়েছেন। তাই তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমরা আনন্দ মিছিল বের করব। আগামীকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার দিকে শহরের টেংকের পাড়ে আনন্দমিছিল বের করব।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিদায়ী কমিটি কোনোভাবেই ছাত্রদলের কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করার এখতিয়ার রাখে না। আমরা সোমবারের কর্মসূচির অনুমতির জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি। রাতের মধ্যেই অনুমতি পেয়ে যাব বলে আশা করছি।’

জেলা ছাত্রদলের বিদায়ী কমিটির আহ্বায়ক রুবেল চৌধুরী ও সদস্যসচিব মহসিন মিয়া স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের একটি প্যাডে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সীমাহীন লোডশেডিং এবং আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে সোমবার একই জায়গায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সেখানে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

রুবেল চৌধুরী বলেন, ‘নতুন কমিটিকে আমরা মানি না। তারা যেখানে কর্মসূচি ঘোষণা করবে, সেখানেই তাদের প্রতিহত করা হবে। আমরা সেখানেই কর্মসূচি পালন করব।’
গত বৃহস্পতিবার রাতে শাহীনুর রহমানকে আহ্বায়ক, সমীর চক্রবর্তীকে সদস্যসচিব ও পাঁচজনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে জেলা ছাত্রদলের আংশিক কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। এর মধ্যে সমীর চক্রবর্তী আগের কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। আগামী এক মাসের মধ্যে আহ্বায়ক কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর আগে ২০২২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন রুবেল চৌধুরী ও সদস্যসচিব মহসিন মিয়া।

নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের জেরে গতকাল শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে জেলা শহরের কান্দিপাড়া এলাকায় গোলাগুলি, বিস্ফোরণ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। পদবঞ্চিত রুবেল চৌধুরী ও মহসিন মিয়ার নেতৃত্বে দুই-তিন শ নেতা-কর্মী এই হামলা চালান। তাঁদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল। পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা গুলিও ছুড়েছেন। তাঁদের সঙ্গে জেলা যুবদল ও জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরাও ছিলেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, ‘সদ্য ঘোষিত কমিটি এবং বিদায়ী কমিটির কর্মসূচির কথা আমরা জানতে পেরেছি। কাউকে সেখানে কোনো কর্মসূচি করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। কেউই কোনো ধরনের কর্মসূচি করতে পারবে না। পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।’