ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিতে তিন দিনব্যাপী ‘প্রথমা বইমেলা’ শুরু

সাভারের আশুলিয়ার খাগান এলাকায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে তিন দিনব্যাপী প্রথমা বইমেলায় বই দেখছেন দর্শনার্থীরা
ছবি: শামসুজ্জামান

ঢাকার অদূরে প্রথম আলো সার্কুলেশন বিভাগের আয়োজনে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ‘প্রথমা বইমেলা’। সহযোগিতায় প্রথমা ডট কম ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। সাভারের আশুলিয়ার খাগান এলাকায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির একাডেমিক ভবন-৪ (নলেজ টাওয়ারের) গ্রাউন্ড ফ্লোরে আজ রোববার থেকে আগামী মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ মেলা চলবে।  

আজ সকাল ৯টায় ফিতা কেটে মেলার উদ্বোধন করা হয়। এ সময় প্রথম আলোর ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ও যুব কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মুনির হাসান, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরি কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ এম এম হামিদুর রহমান, লাইব্রেরিয়ান মুহাম্মদ মিলন খান, প্রথম আলোর সার্কুলেশন বিভাগের প্রধান মহিউদ্দিন রওনক, ডেপুটি ম্যানেজার রাসেল রানা, সার্কুলেশন বিভাগের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী রেজাউর রহমান, সার্কুলেশন বিভাগের আঞ্চলিক নির্বাহী (গাজীপুর) আবুল বাশার বাবু প্রমুখ।  

মেলার আয়োজকেরা জানান, মেলায় পাঠকদের জন্য দেশি-বিদেশি প্রকাশনীর বইয়ে বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ভারতীয় বিভিন্ন প্রকাশনীর বইয়ে ১০ শতাংশ, প্রথমার বইয়ে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ (বই অনুযায়ী) এবং অন্য প্রকাশনীর বইয়ে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় রয়েছে।

মেলা ঘুরে দেখা যায়, স্টলে সাজানো রয়েছে হরেক রকমের বই। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, প্রেমেন্দ্র মিত্র, সমরেশ মজুমদার, সত্যজিৎ রায়, জয় গোস্বামী, ড্যান ব্রাউন, হুমায়ূন আহমেদ, সুকুমার রায়, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, আনিসুল হকসহ আরও অনেক লেখকের বই সাজানো রয়েছে।

স্টলের টেবিল থেকে পাশেই একটি কাঠের আসনে বসে হরিশংকর জলদাশের উপন্যাস ‘এখন তুমি কেমন আছ’ পড়ছিলেন মিজানুর রহমান। ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিতে ঘুরতে এসেছেন তিনি। মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গল্প বা উপন্যাস পড়তে ভীষণ ভালো লাগে। ঘুরতে এসে সুযোগ পেলাম তাই উপন্যাসটিতে চোখ বুলালাম। এমন আয়োজন বইপ্রেমীদের জন্য ভীষণ প্রয়োজন।’

সম্প্রতি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত উপন্যাস ‘অপরাজিত’ পড়েছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অদিতি আবদুল্লাহ বই পড়ার আগ্রহ থেকে মেলায় বিভিন্ন লেখকের বইয়ে কিছু সময়ের জন্য চোখ বুলিয়ে নেন। বই কিনতে ইচ্ছুক তিনি। তিনি বলেন, ‘বই পড়তে ভালো লাগে। মেলায় ঘুরে ঘুরে বই দেখি, পছন্দ হলে কিনে নিই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রতি মাসেই এ ধরনের মেলার আয়োজন করা উচিত। তাহলে আমরা নতুন নতুন লেখকের বইগুলো সম্পর্কে জানার পাশাপাশি কিনে পড়ার সুযোগ পাব।’

পাবলিক হেলথ বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী মাহিয়া আক্তার বন্ধু আমেনা আক্তার ও ইসরাত জাহানকে নিয়ে বই কিনছিলেন। মেলা থেকে বন্ধুর কাছ থেকে একটি বই উপহার পেয়েছেন তিনি।

সাভারের আশুলিয়ার খাগান এলাকায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে আজ রোববার সকালে তিন দিনব্যাপী প্রথমা বইমেলার উদ্বোধন করা হয়
ছবি: প্রথম আলো

আমেনা আক্তার বলেন, ‘এখন আমরা অনেক বেশি প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে যাচ্ছি। মুঠোফোনেও বই পড়া যায়, তবে তাতে প্রকৃত স্বাদ মেলে না। বই সংগ্রহ করে পড়ার মধ্য দিয়ে মনস্তাত্ত্বিক শান্তি পাওয়া যায়।’

মেলায় স্থান পেয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বন্ধুসভার বন্ধু সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী সালমান ফারসীর দুটি ডিটেকটিভ থ্রিলার উপন্যাস অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার ও সুফলতলার গোরস্তান। তিনি বলেন, ‘একজন লেখক হিসেবে উপন্যাস লেখার সময় আমি চিন্তা করেছি নিজের মনের ভেতর জমানো ব্যাপারগুলো প্রকাশ করতে। বাস্তব জীবনে অনেক কঠিন জায়গায় ভ্রমণ করা আমাদের সম্ভব নয়, যা লেখার মাধ্যমে সম্ভব করানো যায়। মানুষের জীবন কখনো পরিপূর্ণ নয়। লেখার মাধ্যমে সেই শূন্যস্থানটা কিছুটা পূরণ করা যায়। পাঠক হিসেবেও ব্যাপারটা প্রায় কাছাকাছি। বই পড়ার মাধ্যমে মগজকে শান্তি দেওয়া যায়। লেখকের চিন্তাধারায় প্রবেশ করে নতুন জগত আবিষ্কার যায়।’

প্রথম আলোর ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ও যুব কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মুনির হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এই উদ্যোগ। শিক্ষার্থীরা অনেক সময় তাঁদের পড়াশোনার ব্যস্ততার কারণে পছন্দের বই সংগ্রহ করতে পারেন না। এ ধরনের মেলা তাঁদের বই কিনতে ও পড়তে উৎসাহিত করবে।