রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা
রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুসন্ধান কমিটির ওপর অনাস্থা, সদস্যদের পদত্যাগ
রংপুরে শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুসন্ধান কমিটির সদস্যরা পদত্যাগ করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার কমিটির তিন সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। শিক্ষার্থীরা অনাস্থা পোষণ করায় পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন কমিটির সদস্যরা।
পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী। পদত্যাগ করা সদস্যরা হলেন, কমিটির আহ্বায়ক ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক মতিউর রহমান, সদস্যসচিব ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শফিকুর রহমান, সদস্য ও রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বিজন মোহন চাকী।
এ সম্পর্কে অধ্যাপক মতিউর রহমান বলেন, ‘আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আমাদের কমিটির ওপর অনাস্থা পোষণ করেছেন। তাই আমরা দায়িত্ব পালন করতে আর স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছি না। এ জন্য আমরা পদত্যাগ করেছি।’
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর ফটকের সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। এ ঘটনার পর ১৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিন সদস্যের তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে কমিটির সদস্যরা তথ্য–উপাত্ত, ফুটেজ, ছবিসহ বিভিন্ন ডকুমেন্ট সংগ্রহ করেন। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কমিটির পক্ষ থেকে আহবান জানানো হয়েছিল। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা কমিটির সদস্যদের প্রতি অনাস্থা পোষণ করেন।
আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। নিরস্ত্র আবু সাঈদকে পুলিশের গুলি করার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সোচ্চার হয় মানুষ। কোটা সংস্কার আন্দোলন একপর্যায়ে সরকার পতনের এক দফায় রূপ নেয়। ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।
আবু সাঈদ নিহতের ঘটনায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আবদুল্লাহ আল মামুন, রংপুর রেঞ্জের সাবেক উপপুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আব্দুল বাতেন, রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামানসহ ১৭ জনের নামে হত্যা মামলা করেছে আবু সাঈদের পরিবার। গত রোববার রংপুরের অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের বিচারক রাজু আহমেদের আদালতে এ মামলা করেন আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী।