দুই সপ্তাহ ধরে মজুরি বন্ধ, কাজে যাচ্ছেন না তারাপুর চা–বাগানের শ্রমিকেরা

সিলেটের তারাপুর চা বাগানে দুই সপ্তাহের মজুরিসহ ৬ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন শ্রমিকেরা। গতকাল রোববার দুপুরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শ্রমিকেরা
ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের তারাপুর চা–বাগানের শ্রমিকদের দুই সপ্তাহ ধরে তলব (মজুরি) বন্ধ আছে। এ অবস্থায় কাজ বন্ধ রেখেছেন শ্রমিকেরা। দুই সপ্তাহের তলবসহ প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি দেওয়া বকেয়া এরিয়ার বিলের তৃতীয় দফার টাকাসহ সাত দফা দাবিতে শ্রমিকেরা দুই দিন ধরে কর্মবিরতি পালন করছেন।

শ্রমিকেরা বলেন, আগামীকাল মঙ্গলবারের মধ্যে বিষয়টির কোনো সমাধান না করা হলে টানা কর্মবিরতি পালন করবেন তাঁরা।

শ্রমিকদের সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, দুই সপ্তাহের তলব প্রদান, এরিয়ার বিলের তৃতীয় দফার টাকা প্রদান, অবসরের টাকা প্রদান, প্রতি মাসে প্রভিডেন্ট ফান্ডের (ভবিষ্য তহবিল) টাকা জমা দেওয়া, ঘরবাড়ি মেরামত করে দেওয়া, পানির সমস্যা সমাধান ও বাগানে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা।

বাগানের শ্রমিকেরা জানান, দুই সপ্তাহ বেতন বন্ধ থাকায় শ্রমিকেরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। অনেকের বাড়িতে খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। বেতন না পাওয়ায় পৌষসংক্রান্তিও পালন করতে পারেননি শ্রমিকেরা।

তারাপুর পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুনীল মোদী বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির কারণে বারবার বেতন আটকে যাচ্ছে। এতে শ্রমিক পরিবারে নানা সংকট বাড়ছে। বারবার বাগান বন্ধ থাকাটা আমরাও চাই না। বাধ্য হয়ে অভাবের তাড়নায় আন্দোলন করছি। আজ সোমবার পৌষসংক্রান্তির জন্য কর্মসূচি স্থগিত রয়েছে। তবে কাল সমাধান না হলে টানা কর্মবিরতি পালন করব।’

চা-বাগান কর্তৃপক্ষ জানায়, নগরের পাঠানটুলা এলাকার প্রায় ৪২৩ একরের তারাপুর চা–বাগান দেবোত্তর সম্পত্তি। ২০২০ সালে বাগান পরিচালনার লক্ষ্যে পাঁচ বছরের জন্য ১১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ২০২১ সাল থেকে তারাপুর চা–বাগান ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে।

তারাপুর চা–বাগানের ব্যবস্থাপক রিংকু চক্রবর্তী বলেন, শ্রমিকেরা দুই সপ্তাহের বেতনের জন্য আন্দোলন করছেন। তাঁদের বেতন দেওয়া হলে সমাধান হয়ে যাবে। তিনি বাগান পরিচালনা কমিটিকে বিষয়টি জানিয়েছেন। গতকাল রোববার পরিচালনা কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটি হয়নি। আজ সন্ধ্যায় অথবা কাল বৈঠকের পর বিষয়গুলো সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

রিংকু চক্রবর্তী আরও বলেন, বাগানে চা–পাতা উৎপাদনের নিজস্ব যন্ত্র নেই। অন্য কারখানায় গিয়ে চা–পাতা বানাতে হয়। এ জন্য খরচ বেশি। এরপরও কোনোমতে চা–বাগানটি পরিচালনা করা হচ্ছে।