মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম নামে এক সংগঠনের নেতৃত্ব নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের দুই নেতার মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার বেলা একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই হলের একটি কক্ষ ভাঙচুরেরও ঘটনা ঘটে।
মারামারিতে জড়িত ছাত্রলীগের ওই দুই নেতা হলেন রমজান হোসেন ও আরাফাত রায়হান। দুজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির উপদপ্তর সম্পাদক পদে ছিলেন। দুজনই ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের উপপক্ষ চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ারের নেতা। এ উপপক্ষের নেতা-কর্মীরা নিজেদের শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেন।
আরাফাত রায়হান বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। অন্যদিকে রমজান হোসেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী রমজানের ছাত্রত্ব নেই।
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রমজান হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম নামে সংগঠনের সভাপতি। অন্যদিকে আরফাত রায়হান ওই সংগঠনেরই দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। ২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি এ কমিটি করা হয়েছিল। মেয়াদ ছিল এক বছর। তবে এখনো ওই কমিটির কার্যক্রম চলছে।
ওই কমিটির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নতুন কমিটির দাবিতে সংগঠনের কর্মীদের মধ্যে অসন্তুষ্টি রয়েছে। বিভিন্ন সময় এসব নিয়ে আরাফাত ও রমজানের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হতো। সর্বশেষ এসবের জেরে গত বুধবার আরাফাতকে সংগঠনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মেসেঞ্জার গ্রুপ থেকে বের করে দেন রমজান হোসেন। পরে ওই দিন রাতেই রমজান হোসেনের নেতৃত্বাধীন এ কমিটি অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন আরাফাত। এ নিয়ে রমজান ও আরাফাতের মধ্যে বিবাদ চলছিল। পরে আজ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলে এসব নিয়ে কথা-কাটাকাটির জেরে দুজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে আরাফাতের অনুসারীরা রমজানের কক্ষ ভাঙচুর করেন।
জানতে চাইলে রমজান হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আরাফাত সংগঠনকে কটাক্ষ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এসবের প্রতিবাদ করায় আরাফাত দলবল নিয়ে হামলা করেছেন। তাঁর কক্ষ ভাঙচুর ও লুটপাট করেছেন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন আরাফাত রায়হান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কমিটির মেয়াদ না থাকায় তিনি অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন। তিনি আজ তাঁর কক্ষেই ছিলেন। রমজান অতর্কিত এসে তাঁর ওপর হামলা করেছেন।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ অহিদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে কক্ষ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় হল প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। মারামারির ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ তাঁরা পাননি। অভিযোগ পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।