লিবিয়া থেকে ইতালি রওনা হওয়ার দেড় মাসেও খোঁজ মিলছে না তরুণ শিপনের

শিপন আহমদ
ছবি: সংগৃহীত

সিলেট থেকে প্রায় সাত মাস আগে ইউরোপের দেশ ইতালি যাওয়ার জন্য বের হয়েছিলেন তরুণ শিপন আহমদ (২৫)। তিনি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের পালেরচক গ্রামের হুসমত আলীর ছেলে। সর্বশেষ গত ২৬ মে লিবিয়া অবস্থানকালে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন শিপন। এর পর থেকে প্রায় দেড় মাসেও তাঁর কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না পরিবারের সদস্যরা।

শিপন আহমদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এলাকার অনেকেই দালাল ধরে ইউরোপ যাচ্ছেন। শিপন আহমদও পরিবারে সচ্ছলতা আনতে ইউরোপে যেতে চেয়েছিলেন। এর আগে তিনি মাধ্যপ্রাচ্যে ছিলেন। সেখান থেকে ইউরোপের দেশে যেতে চেয়েছিলেন। তবে পথে পুলিশের হাতে ধরা খেয়ে ওমানের কারাগারে বেশ কিছুদিন বন্দী ছিলেন। এরপর তিনি দেশে ফেরেন।

ছেলের চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন শিপনের মা হাওয়ারুন নেছা। শিপন দেশে ফেরার পর অসুস্থ মায়ের মৃত্যু হয়। এর বছরখানেকের মধ্যে শিপন দালালের মাধ্যমে দেশ থেকে আবার ইতালি যাওয়ার জন্য কিছু জমি বিক্রি করে লিবিয়ায় যান। লিবিয়ায় অবস্থানকালে দালালের মাধ্যমে একাধিকবার সাগরপথে ইতালি যাওয়ার জন্য চেষ্টা করেছিলেন। তবে কোনো বারই সফল হতে পারছিলেন না। সর্বশেষ গত ২৬ মে লিবিয়া থেকে ইতালি যাচ্ছেন—এমন কথা বাড়িতে ফোন দিয়ে বলেছিলেন। এর পর থেকে অপেক্ষার প্রহর বাড়তে থাকে পরিবারের সদস্যদের। কিন্তু প্রায় দেড় মাস হতে চললেও বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে শিপনের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

শিপনের চাচাতো ভাই আজির উদ্দিন বলেন, শিপনের সঙ্গে তাঁর বোঝাপড়া ভালো ছিল। তবে দেশে কোন দালালের সঙ্গে শিপন যোগাযোগ করেছিলেন, কত টাকা দিয়েছিলেন, সেসব তিনি কিছুই জানেন না। তিনি শুনেছেন সর্বশেষ ছোট বোন রুবি বেগমকে ২৬ মে ফোন দিয়ে শিপন বলেছিলেন তাঁর জন্য দোয়া করতে। পরিবারের সদস্যদের আশা শিপন ফিরবেন। ছেলের চিন্তায় বাবা হুসমত আলী অনেকটা শয্যাশায়ী। বারবার ছেলের খোঁজ করছেন তিনি। শিপনের ছোট বোন রুবি বেগম আগে কলেজে যাতায়াত করলেও ভাইয়ের চিন্তায় তিনিও এখন ঘর থেকে তেমন বের হন না।

সিলেট জেলা প্রশাসনের প্রবাসীকল্যাণ শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টি কেউ তাঁদের জানাননি। তিনি বিষয়টি এখন জানতে পেরে খোঁজ নিয়ে দেখবেন। তিনি আরও বলেন, প্রবাসীসংক্রান্ত বিষয়গুলো জেলা প্রবাসীকল্যাণ শাখাকে লিখিত কিংবা মৌখিক আকারে অবহিত করলে তারা বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখে।