দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সিং সুপারভাইজার ইতি খন্দকার বলেন, ‘সকাল আটটা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত যে মানুষটা অসুস্থ মানুষের সেবা দিলেন। ডিউটি শেষ করে বের হওয়ার মাত্র ২০ মিনিটের মাথায় তিনি লাশ হয়ে ফিরলেন। এটাই মেনে নিতে পারছি না। এখন তাঁর দেড় বছরের বাচ্চাটাকে কে দেখে রাখবে।’

কুন্তী রানী দেবীগঞ্জ উপজেলা পামুলী ইউনিয়নের কৃষক প্রীতিময় কুমার বর্মণের স্ত্রী। তিনি দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ছিলেন।

দেবীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইয়াকুব আলী প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় থ্রি-হুইলার ও মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়েছে। লাশটি আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, আজ বেলা দুইটার দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্ব পালন শেষে একটি থ্রি-হুইলারে চেপে বাড়িতে ফিরছিলেন কুন্তী রানী। এ সময় বোদা-দেবীগঞ্জ সড়কের লক্ষ্মীরহাট-চুলিয়ার মোড় এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মাইক্রোবাস তিন চাকার যানকে ধাক্কা দেয়। এতে মাইক্রোবাস ও তিন চাকার যানটি দুমড়েমুচড়ে যায়।

এ দুর্ঘটনায় ওই যানের যাত্রী কুন্তী রানী ও মো. কাইয়ুম (৩৩) ও মাইক্রোবাসের যাত্রী মরিয়ম আক্তার (৪০) গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন কুন্তী রানী ও কাইয়ুমকে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক কুন্তী রানীকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ সময় চালক মাইক্রোবাসটি ফেলে পালিয়ে যান। মাইক্রোবাসের যাত্রী মরিয়ম আক্তারকে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নিহত কুন্তী রানীর প্রতিবেশী মিঠুন চন্দ্র বর্মণ প্রথম আলোকে বলেন, ‘কাকিমার (কুন্তী রানী) ডিউটি শেষ হলে প্রতিদিন কাকা (প্রীতিময় কুমার বর্মণ) মোটসাইকেলে করে বাড়িতে নিয়ে আসতেন। আজ (শনিবার) তাঁদের মেয়ে শর্মী রানী অসুস্থ থাকায় কাকিমাকে আনতে যেতে পারেননি কাকা। এ জন্যই কাকিমা থ্রি-হুইলারে বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। সুস্থ একটা মানুষের এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না।’