ছাত্র ইউনিয়নের দুই নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের দুই নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’। রোববার বিকেলে
ছবি: প্রথম আলো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবনের দেয়ালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রাফিতি মুছে ওই দেয়ালে ধর্ষণবিরোধী গ্রাফিতি আঁকার অভিযোগে ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের একাংশের সভাপতি অমর্ত্য রায় ও সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের থানায় দায়ের করা অভিযোগের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। প্রগতিশীল শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ আজ রোববার ওই সব কর্মসূচি পালন করে।

বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে ভাস্কর্যের সামনে থেকে ওই বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে পরিবহন চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে তারা।

বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীদের ‘বহিষ্কার মামলার হুলিয়া, নিতে হবে তুলিয়া’, ‘মামলাবাজি যেখানে, লড়াই হবে সেখানে’, ‘অমর্ত্যর বিরুদ্ধে মামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘ঋদ্ধর বিরুদ্ধে মামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘জবাব তোমায় দিতেই হবে, নইলে গদি ছাড়তে হবে’, একই বৃন্তে দুটি ফুল, ফারজানা আর নুরুল’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

মিছিল-পরবর্তী সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নূর এ তামিমের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের সহসভাপতি আশফার নবীন। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান দিনে দিনে কীভাবে ক্ষমতাসীন দলের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হচ্ছে। মতপ্রকাশ স্বাধীনভাবে না করতে পারলে, স্বাধীনভাবে ছবি আঁকাতে না পারলে গণতান্ত্রিক চর্চা হুমকির মুখে পড়ে। সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া ধর্ষণকাণ্ডের পর ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ যখন আন্দোলন করছে, তখন একটা মহল ষড়যন্ত্র করে দুজন শিক্ষার্থী যাঁরা সব সময় দুর্নীতি, অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করে দেয়, বহিষ্কার করে দেয়। বারবার জিজ্ঞাসা করার পরও তারা বলতে পারছে না কোন ধারা মেনে বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রশাসন কোনোভাবেই মামলার বিষয়টি খোলাসা করছে না। কোনো নথি দিচ্ছে না।’

প্রসঙ্গত, ৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবনের দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর গ্রাফিতি মুছে ধর্ষণবিরোধী দেয়ালচিত্র আঁকার অভিযোগে ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের একাংশের সভাপতি অমর্ত্য ও সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্যকে গত মঙ্গলবার এক বিশেষ সিন্ডিকেট সভা থেকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার ও তাঁদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় আইনে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার আশুলিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।