বিএনপির মহাসমাবেশের আগের দিন ফরিদপুরে ৪২ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার

আগামীকাল শনিবার বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে ফরিদপুরের বিভিন্ন প্রবেশপথে বসানো হয়েছে পুলিশের তল্লাশিচৌকি। যানবাহন থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন পুলিশ সদস্যরা। আজ শুক্রবার ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের রাজবাড়ীর বদরপুর রাস্তার মোড়েছবি: আলীমুজ্জামান

রাজধানী ঢাকায় বিএনপির ডাকা মহাসমাবেশের এক দিন আগে ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান চালিয়ে দলটির ৪২ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে আজ শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত সালথা, ফরিদপুর সদর, সদরপুর, বোয়ালমারী, মধুখালী, আলফাডাঙ্গা ও চরভদ্রাসন উপজেলায় এসব গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তারের এই সংখ্যা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ কে কিবরিয়া।

বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেছেন, আগামীকালের ঢাকার সমাবেশে যেন নেতা-কর্মীরা না যেতে পারেন, এ জন্য ধরপাকড় চালাচ্ছে পুলিশ। যদিও পুলিশের তরফ থেকে এ ধরনের অভিযোগ নাকচ করে দেওয়া হচ্ছে। মধুখালী, আলফাডাঙ্গা ও বোয়ালমারী উপজেলা নিয়ে গঠিত মধুখালী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সংখ্যাটা বলতে পারছি না। তবে রাজনৈতিক কারণে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। তাঁদের সবার নামেই বিভিন্ন মামলা আছে। এসব মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় আমরা জানি না।’

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বেলা তিনটা থেকে আজ শুক্রবার বেলা তিনটা পর্যন্ত বিএনপির এই নেতা-কর্মীদের বাসাবাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে সংশ্লিষ্ট থানা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীরা হলেন সদরপুর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বজলু মাস্টার, বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মো. লুৎফর রহমান, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াকুব হোসেন, বোয়ালমারী পৌর যুবদলের সদস্য মোহাম্মদ আল-আমিন হোসেন, বোয়ালমারী উপজেলা কৃষক দলের সাবেক সভাপতি হেলিম মিয়া, চরভদ্রাসন উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি ও চরহরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান, মধুখালী উপজেলার বাগাট ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাবিবুর রহমান খান, কোড়কদী ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মঞ্জু মোল্লা, গাজনা ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, মেগচামী ইউনিয়ন যুবদল নেতা কিয়াম শেখ, মধুখালী সরকারি আইনুদ্দিন কলেজের ছাত্রদলের সদস্য মোহাম্মদ জিহাদ শেখ, বাগাট ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য অলেমান চৌধুরী, আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাদী ওহিদ, আলফাডাঙ্গা পৌর বিএনপির সদস্য মো. মিজান ও উপজেলা বিএনপির কর্মী-রনি, জনি, জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসেম খান, মধুখালী উপজেলা বিএনপির কর্মী নাসিরুদ্দিন, ইমরান মিয়া, শাজাহান শেখ, কাছিরুউদ্দিন, মধুখালীর কামারখালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. আক্কাস মৃধা, মধুখালীর যুবদল নেতা মো. ওসমান ভূঁইয়া। এ ছাড়া ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বিএনপি কর্মী আলমগীর মোল্লা, সিদ্দিক মাতুব্বর, তোরাফ মোল্লা, আবু তালেব শেখ, মুরাদ, হান্নান, রফিক মুন্সী, ওমর আলী, জাফরসহ উপজেলার মোট ১৯ জন বিএনপি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ফরিদপুর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব একে কিবরিয়া বলেন, নেতা-কর্মীদের বাসায় গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছে পুলিশ। এভাবে গ্রেপ্তার করে সরকারের পতন ঠেকানো যাবে না। অবিলম্বে গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবি জানান তিনি।

সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁরা সবাই নিয়মিত মামলার আসামি। বিভিন্ন মামলায় তাঁদের নাম থাকায় বা তদন্তে নাম উঠে আসায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখানে রাজনীতি টেনে আনার সুযোগ নেই।