চসিকে গৃহকর নিয়ে ২০০ কোটি টাকার ঘুষ–বাণিজ্যের অভিযোগ

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন করদাতা সুরক্ষা পরিষদের নেতারা
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) গৃহকরের আপিল শুনানি নিয়ে ২০০ কোটি টাকার ‘ঘুষ’-বাণিজ্য হচ্ছে অভিযোগ করেছেন করদাতা সুরক্ষা পরিষদের নেতারা। গৃহকর কমিয়ে দেওয়ার নামে সিটি করপোরেশনের রাজস্ব বিভাগের কর্মীরা করদাতাদের হয়রানি করছেন বলেও দাবি করেছেন তাঁরা।

আজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন করদাতা সুরক্ষা পরিষদের নেতারা। তাঁরা ‘গলাকাটা’ গৃহকর আদায়ের কার্যক্রম বাতিল করার দাবি জানান। এই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তাঁরা।

সংবাদ সম্মেলনে সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর আবদুল মালেক বলেন, গৃহকরের আপিল শুনানি নিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছেন সিটি করপোরেশনের রাজস্ব বিভাগের কর্মীরা। অযৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করা গৃহকর কমিয়ে দেওয়ার নামে মানুষের কাছ থেকে ঘুষ নিচ্ছেন। এই ঘুষের পরিমাণ ২০০ কোটি টাকা হবে।

এর ব্যাখ্যা দিয়ে করদাতা সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ নুরুল আবচার বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় দুই লাখ হোল্ডিং আছে। এসব হোল্ডিং থেকে সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ আদায় করা হচ্ছে বলে মানুষ তাঁদের কাছে অভিযোগ করেছেন।

আরও পড়ুন

লিখিত বক্তব্যে মুহাম্মদ নুরুল আবচার বলেন, গলাকাটা গৃহকরের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ১৮ সেপ্টেম্বর একটি সভায় মেয়রের উদ্দেশে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কিছু কথা বলেছিলেন। মর্মবেদনা থেকে এসব কথা বলেছিলেন। অবশ্য আঞ্চলিক ভাষার বাক্যগুলো সুমধুর ছিল না। তাই এই বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন তিনি।

এ ঘটনায় সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর একান্ত সহকারীর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছিলেন। মামলায় মুহাম্মদ নুরুল আবচার সম্প্রতি আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।

আরও পড়ুন

তবে মামলার পরও আন্দোলনের মাঠে থাকবেন বলে জানিয়েছেন মুহাম্মদ নুরুল আবচার। তিনি বলেছেন, মেয়রের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত কোনো দ্বন্দ্ব বা বিবাদ নেই। তাঁরা দুজনই একই নগরের বাসিন্দা এবং একই রাজনৈতিক মতাদর্শের অনুসারী। কিন্তু মেয়র নির্বাচনের আগেও অস্বাভাবিক গৃহকর থেকে নগরবাসীকে রেহাই দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু চেয়ারে বসে তা ভুলে গেছেন। তাঁর কাছ থেকে এ ধরনের তামাশা চট্টগ্রামবাসী আশা করেনি। এ জন্য ওই দিনের সভা থেকে অপ্রিয় সত্য কথা বের হয়ে এসেছিল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ। আপিল শুনানির সঙ্গে তো রাজস্ব বিভাগের কর্মচারীরা যুক্ত নন। ২০০ কোটি টাকা তো গৃহকরও হবে না। আর আপিল শুনানি বোর্ডে কাউন্সিলর, প্রকৌশলী ও আইনজীবীদের প্রতিনিধি আছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহম্মদ আমির উদ্দিন, মুখপাত্র হাসান মারুফ, সদস্য জান্নাতুল ফেরদৌস, সংগঠক মুজিবুল হক প্রমুখ।