মায়ের সঙ্গে ফুফুকে দেখতে ক্লিনিকে গিয়ে ব্যালকনি থেকে পড়ে শিশুর মৃত্যু

শিশুর লাশপ্রতীকী ছবি

ফুফুকে দেখতে মা সালমা বেগমের সঙ্গে ক্লিনিকে এসেছিল পাঁচ বছর বয়সী শিশু মো. সোলাইমান। ক্লিনিকের দ্বিতীয় তলায় রোগীর সঙ্গে মাকে রেখে খেলতে খেলতে সিঁড়ি বেয়ে তৃতীয় তলায় ওঠে সে। পরে শিশুটিকে খুঁজতে খুঁজতে নিচে যান মা। কিছুক্ষণের মধ্যে তৃতীয় তলার ব্যালকনি থেকে মায়ের সামনেই নিচে পড়ে যায় শিশুটি। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পরপরই তার মৃত্যু হয়।

আজ সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে পঞ্চগড় জেলা শহরের ডোকরোপাড়া এলাকায় প্রাইম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত শিশু মো. সোলাইমান পঞ্চগড় সদর উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের ধনীপাড়া এলাকার কাঠমিস্ত্রি রহিবুল ইসলামের একমাত্র ছেলে।

শিশুটির চাচা আসাদুল ইসলাম বলেন, গতকাল রোববার প্রাইম ক্লিনিকে সোলাইমানের ফুফু আরিফা বেগমের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একটি ছেলেসন্তানের জন্ম হয়। ওই নবজাতক ও প্রসূতিকে দেখতে মায়ের সঙ্গে দুপুরে ক্লিনিকে যায় সে। ক্লিনিকের দ্বিতীয় তলায় ২০১ নম্বর কক্ষে মা সালমা বেগম রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার সময় শিশুটি বাইরে খেলতে খেলতে সিঁড়ি বেয়ে তৃতীয় তলায় ওঠে। পরে শিশুটিকে খুঁজতে খুঁজতে মা নিচে নেমে ডাকাডাকি করেন। এ সময় ভবনের তৃতীয় তলার দক্ষিণ পাশে খোলা ব্যালকনি থেকে শিশুটি মায়ের সামনেই নিচে পড়ে যায়। চোখের সামনে এমন ঘটনা দেখে মা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে লোকজন ছুটে গিয়ে শিশুটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসা শুরুর কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়। নিচে পড়ার সময় পাশের একটি একতলা ভবনের ছাদে ধাক্কা খেয়ে মাটিতে পড়েছে। ওই ব্যালকনিতে হাফ ওয়াল ছিল। কোনো গ্রিল ছিল না। এ জন্য হয়তো শিশুটি ওপরে উঠতে গিয়ে নিচে পড়ে গেছে।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসক রহিমুল ইসলাম বলেন, শিশুটিকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। হাসপাতালে চিকিৎসা শুরুর পাঁচ থেকে সাত মিনিটের মাথায় শিশুটি মারা যায়। ওপর থেকে পড়ে মাথায় আঘাত পাওয়ায় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।

পঞ্চগড় সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এইচ এস এম সোহরাওয়ার্দী বলেন, শিশুটির লাশের প্রাথমিক সুরতহাল করা হয়েছে। পরিবারের লোকজনকে থানায় আসতে বলা হয়েছে। তাদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।