‘আমার মেয়েডারে হাত-মুখ বাইন্ধা গরম খুন্তি দিয়া ছেহা দিছে’

নির্যাতনপ্রতীকী ছবি

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দিয়ে মারধরসহ শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় স্বামী, শাশুড়ি, ননদসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঘটনার পাঁচ দিন পর গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। তাঁর স্বামী সাকিব মিয়াকে মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই বছর আগে ওই তরুণীর সঙ্গে সাকিব মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছু দিন পর থেকে বিভিন্ন সময় সাকিব যৌতুকের টাকা আনার জন্য স্ত্রীকে চাপ দিতে থাকেন। বেশ কয়েকবার বাবার বাড়ি থেকে দাবি করা টাকা এনে সাকিবকে দেন ওই গৃহবধূ। তবে সম্প্রতি ব্যবসার কথা বলে স্ত্রীকে আবারও ৫০ হাজার টাকা আনার জন্য বলেন সাকিব। এতে রাজি না হওয়ায় গত শুক্রবার ওই গৃহবধূকে মারধর করেন সাকিব।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মারধরের সময় প্রতিবাদ জানালে সাকিবের মা–বাবা ও দুই বোন মিলে ওই গৃহবধূর হাত-মুখ বেঁধে মারধর করেন। একপর্যায়ে খুন্তি গরম করে তাঁর পিঠে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। পরে প্রতিবেশীরা গিয়ে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার স্বামী সাকিব, শাশুড়ি তহুরা আক্তার, ননদ সুমা আক্তার ও রুমা আক্তারের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন ওই গৃহবধূ।

এ ঘটনায় গৃহবধূর বাবা বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। মেয়েডাবে যৌতুকের লাইগগা তাঁর জামাই মাইরধর করে। গত বছরও জমি বেইচ্চা ৫০ হাজার টেহা যৌতুক দিছি। অহন আবার টেহা চায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন। গত শুক্রবার তাঁরা আমার মেয়েডারে হাত–মুখ বাইন্ধা গরম খুন্তি দিয়া ছেহা দিছে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।’

এদিকে ওই গৃহবধূর শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন আছে বলে জানিয়েছেন মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. রফিকুল ইসলাম। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় তিনি বলেন, তাঁকে (গৃহবধূ) প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।

আরও পড়ুন