শরীয়তপুরে নির্বাচন কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় সরকারি আইনজীবীকে অপসারণের সিদ্ধান্ত ইসির

আলমগীর মুন্সি
ছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুর জজকোর্টের সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) আলমগীর মুন্সিকে অপসারণের জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) সিদ্ধান্ত দিয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে এ–সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে নির্বাচন কমিশন থেকে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখার উপসচিব আতিয়ার রহমান গতকাল মঙ্গলবার আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে চিঠিটি পাঠিয়েছেন।

শরীয়তপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আলমগীর মুন্সির বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র দে বাদী হয়ে ১৫ মে আলমগীর মুন্সির বিরুদ্ধে সদরের পালং মডেল থানায় একটি মামলা করেন। গত রোববার ১৯ মে ওই মামলায় আলমগীর মুন্সি জামিন পান। এরপর নির্বাচন কমিশন এমন সিদ্ধান্ত নেয়।

আলমগীর মুন্সি শরীয়তপুর জজকোর্টের আইনজীবী ও শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।

পালং মডেল থানা ও নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, ২১ মে শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হয়েছে। সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তাঁদের একজন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান উজ্জ্বল ঘোড়া প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।

কামরুজ্জামানের পক্ষে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করেছিলেন আলমগীর মুন্সি।
পুলিশ আলমগীর মুন্সিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ১৯ মে তিনি শরীয়তপুরের আদালত থেকে জামিন নেন। পুরো ঘটনা শরীয়তপুরে নির্বাচন কর্মকর্তারা নির্বাচন কমিশনকে জানায়। এরপর নির্বাচন কমিশন জিপির পদ থেকে আলমগীর মুন্সিকে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা জন্য আইনসচিবকে চিঠি দেওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা, ২০১৩–এর বিধি ৮০ (ক) অনুযায়ী নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের হুমকি, ভীতি প্রদর্শন ও বাধা প্রদান শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আলমগীর মুন্সি একজন সরকারি কর্মচারী। আচরণে তাঁর আরও সংযত হওয়া উচিত ছিল। তিনি যে আচরণ করেছেন, তা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি জিপি পদে থাকার অযোগ্য বলে নির্বাচন কমিশনের মনে হয়েছে।

জেলা প্রশাসন ও আইনজীবীদের একটি সূত্র জানায়, ২০০৯ সালে আলমগীর মুন্সি আইন মন্ত্রণালয় থেকে অতিরিক্ত জিপি পদে নিয়োগ পান। ২০১০ সালের মাঝামাঝি সময়ে তিনি ভারপ্রাপ্ত জিপি হন। এরপর ২০১১ সালে তাঁকে জিপি পদে নিয়োগ দেয় আইন মন্ত্রণালয়।

সার্বিক বিষয়ে আলমগীর মুন্সি প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচন কমিশন তাঁকে জিপির পদ হতে অপসারণের কোনো সিদ্ধান্ত দিয়েছেন কি না, তা তিনি জানেন না। আর নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে কোনো দুর্ব্যবহার তিনি করেননি। তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার।