সাজেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যু, অসুস্থ অর্ধশতাধিক

সাজেক
ছবি: প্রথম আলো

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের দুর্গম লংতিয়ান পাড়ায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এবং বুধবার দুপুরে তাঁদের মৃত্যু হয়।

মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির নাম গুগোতি বালা ত্রিপুরা (৬০) ও সিংহ ত্রিপুরা (৬৫)। এ ছাড়া লংতিয়ান পাড়ার আরও অর্ধশতাধিক নারী-শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সপ্তাহ ধরে সাজেক ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গম লংতিয়ান পাড়ায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। কয়েক দিনের মধ্যে ওই পাড়ার প্রতিটি পরিবারে কেউ না কেউ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। পুরো গ্রামের অর্ধশতাধিক মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। এর মধ্যে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে গুগোতি ত্রিপুরা এবং বুধবার বেলা দুইটার দিকে সিংহ ত্রিপুরা মারা যান। এ ছাড়া লংতিয়ান পাড়ায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত অর্ধশতাধিক নারী-শিশুর মধ্যে অন্তত ১০ জনের অবস্থা গুরুতর বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।

সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বনবিহারী চাকমা বলেন, এলাকার আশপাশে কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিক না থাকায় স্থানীয় বৈদ্যদের দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। যাতায়াতের কোনো সড়ক না থাকায় হেঁটে দূর থেকে মাচালং ও উপজেলা সদর হাসপাতালে রোগী পাঠানো সম্ভব নয়। তাই দ্রুত চিকিৎসক দল না পৌঁছালে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে একই এলাকায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে ছয়জন মারা যান। পরে হেলিকপ্টারে চিকিৎসক দল গিয়ে দীর্ঘ এক মাসের চিকিৎসায় নিয়ন্ত্রণে আসে।

সাজেক ইউপির চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা বলেন, লংতিয়ান পাড়ায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পেয়েছেন। লংতিয়ান পাড়াটি দুর্গম হওয়ায় হেঁটে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। লংতিয়ান পাড়ায় মানুষ এখন সবাই ডায়রিয়া আক্রান্ত। তাঁদের ধারণা, প্রচণ্ড গরমের পর ছড়া পানি দূষিত হয়ে পড়ে। এ পানি ব্যবহার করে সেখানে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অরবিন্দ চাকমা বলেন, খবর পেয়ে বুধবার প্রয়োজনীয় ওষুধসহ একজন স্বাস্থ্যকর্মীকে লংতিয়ান পাড়ায় পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার আবার তিন সদস্যদের একটি চিকিৎসক দল প্রয়োজনীয় ওষুধ, স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ আক্রান্ত এলাকার উদ্দেশে রওনা হবে।