চিকিৎসার কথা বলে বৃদ্ধা মাকে রাস্তায় ফেলে গেল ছেলে

বারিশাল-ঢাকা মহাসড়কের গৌরনদীর বাটাজোর বাসস্ট্যান্ডের কাছে ফেলে রেখে যাওয়া মাজেদা বেগম
ছবি:সংগৃহীত

এক বৃদ্ধাকে চিকিৎসা করানোর কথা বলে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের গৌরনদীর বাটাজোর বাসস্ট্যান্ড টাওয়ারের পাশে ফেলে গেছেন তাঁর ছেলে ও ছেলের স্ত্রী। বৃদ্ধার শরীরে ছিল প্রচণ্ড জ্বর। বৃষ্টিতে ভিজে শীতে কাঁপছিলেন তিনি। সোমবার মধ্যরাতে তাঁকে সেখান থেকে উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

ওই বৃদ্ধার নাম মাজেদা বেগম (৭০)। তিনি গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা তৌকির আহম্মেদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

চিকিৎসক তৌকির আহম্মেদ জানান, মাজেদা বেগমের বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। এর পাশাপাশি প্রচণ্ড জ্বরের মধ্যে রাস্তায় ফেলে রাখায় ও বৃষ্টিতে ভেজায় তাঁর অবস্থার আরও অবনতি হয়েছিল। ওই বৃদ্ধাকে সাধ্যমতো চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে তাঁর শারীরিক অবস্থা কিছুটা ভালো।

মঙ্গলবার দুপুরে জ্ঞান ফেরার পর হাসপাতালের শয্যায় ওই বৃদ্ধা জানান, তাঁর নাম মাজেদা বেগম, স্বামীর নাম চান মিয়া মৃধা। তাঁর ছেলের নাম শাহে আলম মৃধা। তাঁদের বাড়ি পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায়। তাঁর ছেলে শাহে আলম মৃধা ও পুত্রবধূ তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন এবং ওই স্থানে তাঁকে রেখে চলে যান।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর বাসস্ট্যান্ডের বাংলালিংক টাওয়ারের কাছে এক বৃদ্ধাকে কাতরাতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাৎক্ষণিক তাঁরা ওই বৃদ্ধাকে সেখান থেকে বাংলালিংক টাওয়ারের নিরাপত্তারক্ষীদের কক্ষে নিয়ে যান। রাত তিনটার দিকে স্থানীয় মো. শিপন ও তাঁর কয়েকজন বন্ধু ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

মাজেদা বেগম তাঁর গ্রামের বাড়ি কোথায়, তা জানাতে পারেননি। এমনকি তিনি তাঁর ছেলের মুঠোফোন নম্বরও দিতে পারেননি। এসব কারণে মহাসড়কের পাশে ফেলে রেখে যাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তাঁর ছেলে শাহে আলম মৃধার সঙ্গে চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস সোমবার রাত সোয়া ১০টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি খুবই অমানবিক। আমরা প্রথমে ওই বৃদ্ধাকে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। পরে ওই বৃদ্ধার সঙ্গে যারা এমন অমানবিক আচরণ করেছে, তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।’