কুলাউড়ায় সাবেক স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার

মৌলভীবাজার জেলার মানচিত্র

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় কিশোরী রেখা বেগমকে (১৫) হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার সাবেক স্বামী রিয়াজ উদ্দিনকে (২৪) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার ঢাকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রিয়াজ পুলিশের কাছে রেখাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।

গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুলাউড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুর রহিম আজ রোববার সকালে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে রিয়াজ বলেছেন, তালাকের পর তাঁর সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে অন্য আরেকজনের বিয়ের কথাবার্তা চলছিল। এটা তিনি মানতে পারছিলেন না। সে জন্য কৌশলে রেখাকে ডেকে বাড়ির পাশের জঙ্গলে নিয়ে ‘আমি না পাইলে আর কেউ পাবে না’ বলে তার গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস দিয়ে হত্যা করেন। এরপর গাছের সঙ্গে লাশ বেঁধে রেখে আত্মগোপনে চলে যান।

এসআই আবদুর রহিম বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান জেনে গতকাল রাত ১১টার দিকে রিয়াজকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে মৌলভীবাজারের আদালতে পাঠানো হবে।

রেখা বেগম উপজেলার বরমচাল ইউনিয়নের পশ্চিম সিংগুর এলাকার বাসিন্দা দিনমজুর রুহুল আমিনের মেয়ে। রিয়াজ উদ্দিন একই এলাকার সেলিম মিয়ার ছেলে। প্রায় ১০ মাস আগে রিয়াজ ও রেখার বিয়ে হয়েছিল। রিয়াজের বড় ভাই ঢাকায় থাকেন। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে তিনি সেখানে চলে যান।

হত্যা মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঢাকায় রিয়াজ উদ্দিন মাদক সেবন করে প্রায়ই স্ত্রীর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন। এ অবস্থায় প্রায় দুই মাস আগে স্থানীয়ভাবে সালিস হয়। সালিসে রিয়াজ স্ত্রীকে তালাকের সিদ্ধান্তের কথা জানান। এ সময় দেনমোহর হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দেন। ২৭ মার্চ রেখা ছাড়া বাড়িতে পরিবারের অন্য কোনো সদস্য ছিলেন না। এ সময় আশপাশের কিছু লোক রিয়াজের সঙ্গে রেখাকে জঙ্গলের দিকে হেঁটে যেতে দেখেন। এর পর থেকে তাঁদের খোঁজ মিলছিল না। ২৯ দুপুরে বাড়ির কাছে গ্রিজিং নয়াবাগান এলাকায় গহিন জঙ্গলে গাছের সঙ্গে ওড়না দিয়ে বাঁধা অবস্থায় রেখার লাশ মিলে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।

ওই দিন রাতে রেখার বাবা রুহুল আমিন বাদী হয়ে রিয়াজ ও তাঁর বাবা সেলিম মিয়াকে (৫৮) আসামি করে হত্যা মামলা করেন। প্রায় দুই বছর আগে চার বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে রিয়াজের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছিল। ওই মামলায় কয়েক মাস জেল খেটে তিনি জামিনে ছাড়া পান।