সমাবেশের জন্য পছন্দের জায়গা পাচ্ছে না যশোর বিএনপি

যশোর জেলার মানচিত্র

২৭ মে যশোর টাউন হল মাঠ বা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে সমাবেশের অনুমতি পাইনি বিএনপি। এ দুটি জায়গার একটিতে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করে যশোর জেলা বিএনপি। কিন্তু টাউন হল মাঠে বিএনপির সমাবেশের অনুমতি না দিয়ে ওই দিনে সরকার–সমর্থিত শ্রমিক ফেডারেশনের সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে যশোরে জেলা প্রশাসক ওই সংগঠনটিকে টাউন হল মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দেয়।  

এদিকে ঈদগাহ মাঠে কোরবানির ঈদের নামাজের জন্য আগে থেকেই প্যান্ডেল করে রেখেছে যশোর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। ফলে ঈদগাহ মাঠেও সমাবেশের অনুমতি পাচ্ছে না দলটি। যে কারণে ২৭ মে সমাবেশের জন্য তৃতীয় বিকল্প কোনো জায়গায় যেতে হবে দলটিকে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২৭ মে যশোর টাউন হল মাঠে জনসমাবেশের জন্য শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে আবেদন করেন সংগঠনের নেতারা। পুলিশের নিরাপত্তাসংক্রান্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সংগঠনটিকে ২৭ মে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টাউন হল মাঠে জনসমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অনুমোদন দেওয়া হয়।
তবে এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানসহ কেউ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব সৈয়দ সাবেরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘২৭ মে যশোরে বিএনপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। ১৬ মে কেন্দ্র থেকে সমাবেশের তারিখ ঘোষিত হওয়ার পর ওই দিনই সমাবেশের জন্য যশোর টাউন হল মাঠ অথবা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়। কিন্তু বিএনপিকে টাউন হল মাঠ ব্যবহারের অনুমতি না দিয়ে আওয়ামী লীগের মদদপুষ্ট সংগঠন শ্রমিক ফেডারেশনকে একই দিনে সমাবেশের জন্য মাঠ ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটা কোনো গণতান্ত্রিক দেশের সরকার বা প্রশাসনের মনোভাব হতে পারে না।’

সৈয়দ সাবেরুল হক আরও বলেন, ‘২৭ মে টাউন হল মাঠ খালি আছে জেনেই আমরা আগেই আবেদন করেছি। অথচ কোনো আবেদন না থাকলেও একই দিনে অন্য একটি সংগঠনকে টাউন হল মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার যুক্তিসংগত কোনো কারণ নেই। আসলেই সরকারের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেছে। এ জন্য বিএনপিকে ভয় পাচ্ছে। বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রাম বাধাগ্রস্ত করতেই সরকার পুলিশ ও প্রশাসনকে দিয়ে এমন আচরণ করছে। বিএনপিকে কোনোভাবে সরকার সংগঠিত হতে দিতে চায় না। ২৭ মে যশোরে যেকোনো মূল্যে বিএনপির সমাবেশ হবে।’

নাশকতা মামলায় ২১ নেতার আগাম জামিন
ওই সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের শতদল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে কর্মী সভা করার ঘটনায় দায়ের করা পুলিশের মামলা থেকে দলের জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাসহ ২১ জন আজ ঢাকার উচ্চ আদালতে হাজির হয়ে আগাম জামিন নিয়েছেন। আদালত ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন মঞ্জুর করেছেন। ওই মামলায় মোট ৪৭ জনকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে ২১ জন জামিন নিয়েছেন।

জামিন পাওয়া নেতাদের মধ্যে আছেন যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন, সদস্যসচিব সৈয়দ সাবেরুল হক, কমিটির সদস্য ও যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান, কাজী আজম, সিরাজুল ইসলাম, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক, জাতীয়তাবাদী যুবদলের জেলা কমিটির সহসভাপতি আমিনুর রহমান ও যুগ্ম সম্পাদক নাজমুল হোসেন, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের জেলা কমিটির সভাপতি রাজিদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা–কর্মী।

জানতে চাইলে যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব সৈয়দ সাবেরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক উপাদানাবলি আইনে দায়ের করা পুলিশের গায়েবি মামলায় উচ্চ আদালতে হাজির হয়ে আমরা ২১ জন আগাম জামিন নিয়েছি। আদালত ছয় সপ্তাহের জন্য আমাদের জামিন মঞ্জুর করেছেন।’