সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি আরও ১৭ সেন্টিমিটার কমেছে, বন্যার আশঙ্কা কেটেছে

সুনামগঞ্জে গত দুদিন ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় নদী ও হাওরে পানি কমছে। আজ রোববার দুপুরে দেখা হাওরের ইসলামপুরেছবি: প্রথম আলো

সুনামগঞ্জে গত দুদিন বৃষ্টি হয়নি, নামেনি উজানের পাহাড়ি ঢল। তাই জেলার প্রধান নদী সুরমাসহ সব নদ-নদীর পানি কমছে। এতে আপাতত বন্যার আশঙ্কা কেটে গেছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা।

এদিকে, দুদিন ধরে কড়া রোদ থাকায় মানুষের মনে স্বস্তি ফিরেছে। তবে নদীতে পানি কমলেও হাওরে পানি স্থিতিশীল আছে।

পাউবোর তথ্যমতে, সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর এলাকায় (যে স্থানে নদীর পানির উচ্চতা মাপা হয়) আজ রোববার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৬ দশমিক ৮৯ মিটার। একই স্থানে গতকাল শনিবার সকাল ৯টায় পানির উচ্চতা ছিল ৭ দশমিক শূন্য ৬ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় পানি কমেছে আরও ১৭ সেন্টিমিটার। বর্ষা মৌসুমে এখানে সুরমা নদীর পানির বিপৎসীমা ৮ দশমিক ৮০ মিটার।

সুনামগঞ্জে গতকাল সকাল ৯টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত কোনো বৃষ্টি হয়নি। এর আগের ২৪ ঘণ্টাও ছিল বৃষ্টিহীন। উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতেও গত দুদিন বৃষ্টি কম হয়েছে। এর ফলে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।

বৃষ্টি না হওয়ায় এবার ঈদুল আজহার নামাজ আদায়, কোরবানিসহ আনুষঙ্গিক কাজও স্বস্তিতে করতে পেরেছেন মানুষজন। গত বছরে ঈদুল আজহার সময় বন্যা ছিল। এর সঙ্গে ছিল বৃষ্টির ভোগান্তি। এবার সেই আশঙ্কা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ঈদের বৃষ্টি না হওয়ায় সবাই খুশি।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা মফিজুর রহমান বলেন, সুরমা নদীর উত্তরপাড়ে সবজির আবাদ হয় বেশি। টানা বৃষ্টিতে তাঁদের অনেক সবজিখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ছিল ভোগান্তি। এখন রোদে সবার মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।

আরও পড়ুন

‘হাওর বাঁচাও আন্দোলন’ সংগঠনের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক বলেন, হাওরে পানি আছে। তবে বৃষ্টি না হওয়ায় নদীতে পানি কমছে। মাঝখানে তো সবাই আতঙ্কে ছিলেন। এখন সেটা কেটেছে। মানুষ কোনো ভোগান্তি ছাড়া ঈদের আনুষ্ঠানিকতা সারতে পেরে খুশি।

সুনামগঞ্জে গত ২০ মে থেকে টানা বৃষ্টি হয়। শুরুতে হালকা ও মাঝারি হলেও পরে শুরু হয় ভারী বৃষ্টি। একই সঙ্গে সুনামগঞ্জের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতেও বৃষ্টি হয়। যে কারণে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামে। পানি বাড়তে থাকে নদী ও হাওরে। এতে মানুষের মনে আতঙ্ক দেখা দেয়। তাহিরপুরে পাহাড়ি ঢলে কিছু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেছেন, আপাতত বন্যার আশঙ্কা নেই। যেহেতু বৃষ্টি হচ্ছে না, তাই পানি আরও কমবে। মূলত ভারী বৃষ্টির সঙ্গে উজানের ঢল নামলেই পানি বাড়ে।

আরও পড়ুন