বিয়ের দুই দিন আগে নিখোঁজ যুবকের লাশ ঝুলছিল কবরস্থানে
সাত বছর প্রেমের পর প্রেমিকার সঙ্গে ঘর বাঁধতে যাচ্ছিলেন যুবক। উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের দিন-তারিখও ঠিকঠাক করা হয়েছিল। হঠাৎ বিয়ের দুই দিন আগে তিনি নিখোঁজ হন। স্বজনেরা কেউ তাঁর সন্ধান পাচ্ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত নিখোঁজের পাঁচ দিনের মাথায় আজ রোববার বিকেলে জয়পুরহাট সদর উপজেলার ধারকি সতিঘাটা এলাকার কবরস্থানের পাশে ঝুলছিল ওই যুবকের লাশ। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে।
লাশ উদ্ধার করা যুবকের নাম মাহমুদুল হাসান পিপাস (২৮)। তিনি জয়পুরহাট সরকারি কলেজের স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। পাশাপাশি একটি ওষুধ কোম্পানির জয়পুরহাট জেলা শহরের বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। তিনি জয়পুরহাট শহরের ধানমন্ডি এলাকার একটি মেসে থাকতেন।
নিহত মাহমুদুলের বন্ধু আরিফ হোসেন বলেন, তাঁর বন্ধু আত্মহত্যা করতে পারেন না। কেউ তাঁকে হত্যা করেছে। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রেমিকার সঙ্গে গত ৩১ জানুয়ারি মাহমুদুলের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। এর আগে ২৯ জানুয়ারি বিয়ের দুই দিন আগে মাহমুদুল নিখোঁজ হন। বন্ধুবান্ধব ও স্বজনেরা তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাচ্ছিলেন। এ ঘটনায় মাহমুদুলের বড় ভাই জয়পুরহাট সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। নিখোঁজের পাঁচ দিনের মাথায় আজ সদর উপজেলার ধারকি সতিঘাটা এলাকার একটি কবরস্থানে তাঁর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
মাহমুদুলের আরেক বন্ধু হাসিবুর রহমান বলেন, ‘এক তরুণীর সঙ্গে সাত বছর প্রেমের সম্পর্কের পর ৩১ জানুয়ারি মাহমুদুলের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। সে বিয়েতে আমাদের বন্ধুবান্ধবদের দাওয়াত করেছিল। বিয়ের দুই দিন আগে মাহমুদুল হঠাৎ নিখোঁজ হয়। এ কারণে আর বিয়ে হয়নি। আজকে আমরা তাঁর ঝুলন্ত লাশ পেলাম।’
মাহমুদুলের ভাই প্রিন্স বলেন, ‘আমার ভাই আত্মহত্যা করেছে—এমন কথা ভাবতে পারছি না। যে জায়গায় লাশ পাওয়া গেছে, সেখানে দিনের বেলায় লোকজন একা যেতে ভয় পায়। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।’
লাশের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছেন জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহেদ আল মামুন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।