রনি আকতারকে হত্যা করা হয়েছে, দাবি মা-বাবার, বিচার চেয়ে মানববন্ধন
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রনি আকতারকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁর মা-বাবা। রনির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে এলাকাবাসী ও পরিবারের লোকজন মানববন্ধন করেছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় পেকুয়া সদরের চৌমুহনীতে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধনে রনির সহপাঠীরাও উপস্থিত ছিলেন।
কলেজছাত্রী রনি আকতার পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাইছড়ি এলাকার জাকের আহমদের মেয়ে। রনির পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের বারদোনা এলাকার সাব্বির আহমদের ছেলে আমিনুর রহমানের সঙ্গে রনির পরিচয় ছিল। ১৩ মার্চ সকালে রনি কলেজে যেতে বাড়ি থেকে বের হন। পথে আমিনুর রহমান বিয়ের আশ্বাস দিয়ে রনিকে তাঁদের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে আমিনুর ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা রনিকে নির্যাতন করেন। ওই দিন রাত একটা থেকে তিনটার মধ্যে রনিকে হত্যা করা হয়। পরদিন ভোরে সাতকানিয়া থানার পুলিশ রনির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
তবে সুরতহাল প্রতিবেদনে কীটনাশক পানে রনির মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করে পুলিশ। এ ঘটনায় ১৪ মার্চ সাতজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলা করা হয়। এ মামলার আসামিরা হলেন আমিনুর রহমান, তাঁর ভগ্নিপতি মো. এনাম, ভাই মো. ফারুক, বোন হাছিনা আকতার ও নাছিমা আকতার, পেকুয়া সদরের শেখেরকিল্লাহ ঘোনার আবদুল হামিদ ও মো. কায়েস।
আজ মঙ্গলবার রনি ‘হত্যার’ বিচার চেয়ে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন মো. রনির মা খালেদা বেগম ও বাবা জাকের আহমদ, আজমগীর, কপিল উদ্দিন, এফ এম সুমন, তারেক নাজেরী, কামাল হোসেন, মোস্তফা মানিক, মো. বাহাদুর, আবু হানিফ প্রমুখ।
রনির মা খালেদা বেগম বলেন, তাঁর মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে সাতকানিয়ায় ডেকে নিয়ে যান আমিনুর রহমান। আমিনুর রহমান, তাঁর মা–বাবা ও আত্মীয়স্বজন নির্যাতন করে রনিকে হত্যা করেন। এ ঘটনায় তাঁরা সাতকানিয়া থানায় হত্যা মামলা করতে গেলে পুলিশ আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলা করে।
খালেদা বেগম বলেন, ‘আমি এখনো বলছি, আমার মেয়েকে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করেছেন আসামিরা। আমার মেয়েকে দাফনের আগে যাঁরা গোসল করিয়েছেন, তাঁরা শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন দেখে আঁতকে উঠেছেন। আমার মেয়েকে যাঁরা হত্যা করেছেন, তাঁদের বিচার চাই।’
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইয়াসির আরাফাত বলেন, রনিকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে ইতিমধ্যে মামলা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে যদি হত্যার আলামত আসে, অবশ্যই মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে এবং হত্যার ধারায় অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।