পটিয়ায় ব্যালট ছিনতাই, কেন্দ্র বাতিল

স্বজনের কাঁধে ভর দিয়ে ভোট ভোটকেন্দ্রে এসেছেন এই বয়স্ক নারী। আজ সকালে চট্টগ্রামের পশ্চিম পটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে।ছবি সৌরভ দাশ

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে আজ দক্ষিণ চট্টগ্রামের চার উপজেলায় ভোট হচ্ছে। এর মধ্যে পটিয়া উপজেলায় সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। তবে সকাল ১০টার দিকে ব্যালট পেপার ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ায় ঘটনা ঘটেছে। কাশিয়াইশ ইউনিয়নের পূর্ব পিঙ্গলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এরপর ওই কেন্দ্রটির ভোট গ্রহণ বাতিল ঘোষণা করা হয় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, ওখানে একটু সমস্যা হয়েছে। পুলিশ ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গেছেন। তাঁদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ওই কেন্দ্রটি বাতিল করা হয়েছে।  

এর বাইরে পটিয়ার আর কোনো কেন্দ্র থেকে তেমন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম। বিভিন্ন কেন্দ্রের বাইরে চেয়ারম্যান পদে দুই প্রার্থীর লোকজনের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।

সকাল ১০টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টায় কোনো কেন্দ্রে ৫ শতাংশ আবার কোনো কেন্দ্রে ১০ শতাংশ পর্যন্ত ভোট পড়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতিও বাড়বে বলে আশা করছেন এজেন্টরা। পটিয়ায় মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৫৪৫ জন।

নির্বাচনে এবার পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদের (আনারস প্রতীক) প্রতিদ্বন্দ্বী চট্টগ্রাম নগর যুবলীগ নেতা দিদারুল আলম (দোয়াত-কলম)। দুই প্রার্থীই হেভিওয়েট। দুজনকে ঘিরে পটিয়া আওয়ামী লীগও বিভক্ত হয়ে পড়েছে। সংসদ সদস্য মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী দিদারের পক্ষ নিয়েছেন। উপজেলা সভাপতি আ ক ম সামশুজ্জামান চৌধুরীসহ অপর একটি অংশ হারুনের পক্ষে কাজ করছে। এ ছাড়া সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরীও হারুনকে সমর্থন দিয়েছেন।

সকাল নয়টায় এয়াকুবদণ্ডী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে দেখা যায় দোয়াত-কলম প্রতীকের ব্যাজ লাগিয়ে কিছু তরুণ ভিড় করেছেন। এই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা পার্থ সারথী দত্ত জানান, ভেতরে কোনো ঝামেলা নেই। তবে ভোটার উপস্থিতি কম। ২ হাজার ১৪ ভোটের মধ্যে তখন পর্যন্ত ১০০ ভোটও সংগ্রহ হয়নি।

আবদুস সোবহান রাহাত আলী উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে আনারস ও দোয়াত-কলমের সমর্থকদের ভিড়। যথারীতি ভেতরে ভোটার উপস্থিতি কম। এখানকার পুরুষ কেন্দ্রে ১০টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ২১৫টি। মোট ভোটার ২ হাজার ৬৫৯টি।

পশ্চিম পটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুরুষ ও নারী কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ভালো দেখা গেছে। এই কেন্দ্রে আনারস প্রতীকের প্রার্থী হারুনুর রশিদের সমর্থন বেশি। কেন্দ্রটিতে মোট ভোটার ৩ হাজার ১টি। সকাল ১০টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৭৫২টি।  

পাইকপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও ভোটার উপস্থিতি ভালো ছিল। তবে কেন্দ্রের বাইরে যতটা, ভেতরে ততটা নয়। এখানকার নারী কেন্দ্রে ২৬০ ভোট পড়েছে ১০টা পর্যন্ত। যা মোট ভোটের ১০ শতাংশের কম।

এদিকে পাশের উপজেলা চন্দনাইশেও সকাল থেকে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু আহমেদ চৌধুরী ও জসীম উদ্দীন আহমেদের মধ্যে ভোটের আগে থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল। ১৩ মে প্রতীক বরাদ্দের দিন ১০০ লাশ ফেলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন আবু। এ নিয়ে তাঁর মনোনয়ন বাতিল করে দেয় কমিশন। পরে উচ্চ আদালতে রিট করে তিনি মনোনয়ন ফিরে পান।

কিন্তু ভোটের দিন আজ সকাল থেকে কোথাও কোনো গন্ডগোলের খবর পাওয়া যায়নি। তবে কেন্দ্রের বাইরে ঘোড়া প্রতীকের আবু আহমেদের লোকজনের উপস্থিতি রয়েছে। জসীমের মোটরসাইকেল প্রতীকের লোকজনও দেখা গেছে কয়েকটি কেন্দ্রে।