ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দশম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী আছিয়ার মৃত্যুর খবর শুনে তার বাড়ির সামনে সহপাঠীদের ভিড়। আজ দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আছিয়া খাতুন ওরফে মিথিলা (১৬) নামের এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে তার মৃত্যু হয়।

আছিয়া সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নে বাহুকা গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে। সে বাহুকা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগে মেধাতালিকায় প্রথম ছিল।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও আছিয়ার পরিবার সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন ধরে প্রচণ্ড জ্বর, শরীরব্যথা ও ডায়রিয়া ছিল আছিয়ার। প্রথমে তাকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছ থেকে ওষুধ এনে খাওয়ানো হয়। পরে অবস্থার পরিবর্তন না হলে গতকাল বুধবার দুপুর ১২টার দিকে তাকে সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তার শরীরে ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি করে হাসপাতালের বাইরে থেকে প্লাটিলেট পরীক্ষার জন্য লিখে দেন। হাসপাতালের পাশেই একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তার রক্ত পরীক্ষা করানো হয়। এরপর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অবস্থার অবনতি হলে আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে তার মৃত্যু হয়। বিকেলে জানাজা শেষে নিজ গ্রামের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অবস্থার অবনতি হলে আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে তার মৃত্যু হয়।

আছিয়ার বাবা আনোয়ার হোসেন আহাজারি করে বলেন, ‘রক্ত পরীক্ষা করানো হলেও গতকাল দিবাগত রাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত কোনো চিকিৎসক আমার মেয়েকে দেখতে আসেননি। শুধু একজন নার্স এসে দেখে গেছেন। এই অবস্থায় বিনা চিকিৎসায় আমার মেয়ের মৃত্যু হলো।’

হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার মিতুল ভৌমিক প্রথম আলোকে বলেন, আছিয়ার জ্বরের উপসর্গ দেখে ডেঙ্গু জ্বর মনে হয়েছে। সে অনুযায়ী তার চিকিৎসা চলছিল। তার রক্তের প্লাটিলেট ছিল ৩৮ হাজার। তবে ডেঙ্গু নিশ্চিত হতে এনএস ১ অ্যান্টিজেন পরীক্ষাটি আজকে করানোর কথা ছিল। এমন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হলো।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলায় গতকাল সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ৭৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত জেলায় মোট ৭৮৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭১১ জন সুস্থ হয়ে ফিরে গেছেন। মৃত্যু হয়েছে দুজনের। তবে আজকের এই মৃত্যুর হিসাবটি পরিসংখ্যানে নেই।