ব্যস্ত সড়কে দাঁড়িয়ে থাকে বাস

বাইপাস রোডে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল অবস্থিত। এর প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে কুড়িগ্রাম বাসস্ট্যান্ড। 

রংপুর নগরের কলেজ রোডে কুড়িগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে বাস সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। এতে নগরবাসীকে চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হয়
ছবি: প্রথম আলো

রংপুরে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থাকার পরেও নগরের ব্যস্ততম এলাকা কলেজ রোডে কুড়িগ্রাম বাসস্ট্যান্ড রয়েছে। গত আড়াই দশক ধরে এই অবস্থায় চলছে। এতে নগরের ১৫টি পাড়া-মহল্লার বাসিন্দাসহ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। 

শহর থেকে কারমাইকেল কলেজ ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়ার পথে কলেজ রোডে ১৯৯৭ সালে চালু হয় কুড়িগ্রাম বাসস্ট্যান্ড। অথচ এই বাসস্ট্যান্ড থেকে দুই কিলোমিটার দূরে শহরের বাইপাস রোডে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল অবস্থিত। এখান থেকে আন্তজেলার বাস চলাচল করে। 

কলেজ রোডে কুড়িগ্রাম বাসস্ট্যান্ড থাকায় কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীদের রিকশা ও অটোরিকশায় যাতায়াত করতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। সেই সঙ্গে কলেজ রোড, খামার, আদর্শপাড়া, বনানীপাড়া, চকবাজার, আশরতপুর, বাবুখা, আলমনগর, কলেজপাড়াসহ নগরের ১৫টি পাড়া-মহল্লার বাসিন্দারা নাগরিকদের চলাচলেও ভোগান্তি পেতে হয় বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

এ প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) মহানগর কমিটির সভাপতি খন্দকার ফখরুল আনাম বলেন, ‘কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থাকার পরও শহরের আবাসিক এলাকায় কুড়িগ্রাম বাসস্ট্যান্ড থাকার কোনো কারণ থাকতে পারে না। এ স্থানের বাসস্ট্যান্ডটি প্রতিনিয়ত নাগরিক বিড়ম্বনায় ফেলছে। এটি কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানাই।’

মোটর মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্রে জানা গেছে, সড়কের পাশে প্রায় ২৫ শতাংশ জায়গায় কুড়িগ্রাম বাসস্টান্ডের অবস্থান। এখান থেকে প্রতিদিন ৩০টি বাস কুড়িগ্রামে যাতায়াত করে। 

গত রোববার সকাল ১০টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের দুই পাশে যাত্রীবাহী তিনটি বাস দাঁড়িয়ে আছে। এ ছাড়া আরেক বাস রাস্তায় আড়াআড়ি করে ঘোরানোর চেষ্টা চলছে। এ সময় রাস্তার দুই দিকে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যাত্রীরা প্রধান সড়কের একপাশে রিকশা কিংবা আটোরিকশা থামিয়ে বাস ধরার চেষ্টা করছেন। আরও দুটি বাস রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বাসস্ট্যান্ডের ভেতর সাত-আটটি বাস রাখার জায়গা নেই। 

সড়কে আটকা পড়া অটোরিকশার পাঁচজন যাত্রীর সঙ্গে কথা হয়। শহর থেকে কারমাইকেল কলেজে প্রতিদিন যাওয়া-আসা করেন শিক্ষার্থী সাইফুর রহমান। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে শহরের মানুষ বেড়ে গেছে, সেই সঙ্গে যানবাহনও বেড়েছে। এই স্থানে একটি বাসস্ট্যান্ড থাকায় চলাচলে ঝুঁকি থেকে যায়। বাসস্ট্যান্ডটি অবিলম্বে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে নিয়ে যাওয়া উচিত।’ 

এই পথে প্রতিদিন রিকশা অথবা অটোরিকশায় চলাচল করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তুহিন ওয়াদুদ। রোববার সকালে এই পথে যেতে তিনিও দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শহরের ভেতর বাস চলাচল করার কারণে নগরবাসীর স্বাভাবিক চলাচলে ভোগান্তি হয়। বাস্ট্যান্ডটি এখানে কোনোভাবেই থাকা উচিত নয়।’

রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান বলেন, বাসস্ট্যান্ডটি এখানে থেকে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।