বিস্ফোরণে কেঁপে উঠছে টেকনাফের ২১টি গ্রাম

কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া। প্যারাবনের পর নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের নাকপুরা গ্রামে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। গত রোববার সকালেফাইল ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গতকাল বৃহস্পতিবারও রাতভর ব্যাপক গোলাগুলি ও মর্টার শেলের বিস্ফোরণ ঘটেছে। টেকনাফের নাফ নদীর তীরে সীমান্তবর্তী ২১টি গ্রাম থেকে এই বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। বিস্ফোরণে কেঁপে কেঁপে উঠেছে গ্রামের বাড়িঘর। এতে সীমান্তের মানুষের আতঙ্ক আরও বেড়েছে। এ নিয়ে টানা ৯ দিন ধরে অব্যাহত গোলাগুলি হওয়ায় সীমান্ত এলাকায় জনজীবন থমকে গেছে। কাজে যেতে পারছেন না শ্রমজীবী মানুষ।

সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, রাখাইন রাজ্যের জেলা শহর মংডু টাউনশিপসহ উত্তর দিকের কুমিরখালী, বলিবাজার, নাকফুরা, নাইচাডং, কোয়াচিডং, কেয়ারিপ্রাং, পেরাংপ্রুসহ কয়েকটি গ্রামে দেশটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে সরকারি বাহিনীর সংঘাত তীব্রতর হয়েছে। মূলত আরাকান আর্মির দখলে চলে যাওয়া সীমান্তচৌকি পুনর্দখলের জন্য পাল্টা আক্রমণ চালাচ্ছে সে দেশের সেনাবাহিনী।

এ অবস্থায় সেখানকার রোহিঙ্গা বসতিগুলোতেও যুদ্ধের আঁচ পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কোনো রোহিঙ্গা যাতে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য বিজিবি সতর্ক রয়েছে। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩ আশ্রয়শিবিরে অবস্থান করছেন সাড়ে ১২ লাখ রোহিঙ্গা। গত ছয় বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি মিয়ানমার।

সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, গুলিবিদ্ধ অনেকে নাফ নদী অতিক্রম করে টেকনাফ পালিয়ে আসার চেষ্টা চালাচ্ছেন। ইতিমধ্যে সীমান্ত অনুপ্রবেশের সময় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কোস্টগার্ড বাহিনীর সদস্যরা আট দফায় চার শতাধিক রোহিঙ্গাকে আটক করে পুনরায় মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অন্তত ২৩ জন গুলিবিদ্ধ রোহিঙ্গা ছিল বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ ৪ মার্চ অনুপ্রবেশের সময় নারী, শিশুসহ ১৪ রোহিঙ্গাকে আটক করে ফেরত পাঠানো হয়। সবাই মংডু টাউনশিপের ফয়াজি ও নুরুল্যাপাড়ার বাসিন্দা। টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, বিকট শব্দে রাতে শক্তিশালী বোমা ও মর্টার শেলের বিস্ফোরণে কাঁপছে টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া, চৌধুরীপাড়া, কুলালপাড়া ও ডেইলপাড়া।

টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাখাইন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদী ও সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে।