ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে অঘোষিতভাবে নোয়াখালী থেকে ঢাকামুখী দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ আছে। বন্ধ রাখা হয়েছে বাসের কাউন্টারগুলোও। কাউন্টারের কর্মীরা বলেন, কখন বাস চলাচল শুরু হবে তা, তাঁরা জানেন না। এর ফলে জরুরি প্রয়োজনেও ঢাকায় যেতে পারছেন না অনেক যাত্রী। এ নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা।
আজ শনিবার সকালে শহর মাইজদীর নতুন বাসস্ট্যান্ড, হাসপাতাল সড়কের মোড়, মাইজদী বাজার, জেলা জামে মসজিদের মোড় এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ওই সব স্থানে থাকা ঢাকামুখী যাত্রীবাহী লাল সবুজ, হিমাচল, একুশে পরিবহনসহ প্রায় সব কটি বাসের কাউন্টার বন্ধ। পাশাপাশি চট্টগ্রাম অভিমুখী বাসের দু-একটি কাউন্টার খোলা থাকলেও কর্মীদের বসে বসে অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে।
ঢাকামুখী বাস লাল সবুজ পরিবহনের কাউন্টারের সামনে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় যাত্রী আশরাফ হোসেনকে। সদর উপজেলার দাদপুর এলাকার এই বাসিন্দা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ছোট ভাই ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকে দেখতে যাওয়া খুবই জরুরি। তাই তিনি সকাল আটটা থেকে বাসের কাউন্টারে কাউন্টারে ঘুরছেন। কোনো কাউন্টার খোলেনি। এ পরিস্থিতিতে কীভাবে ঢাকায় যাবেন, তা নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
রাজনৈতিক সমাবেশ ঘিরে বাস বন্ধের সমালোচনা করেন নতুন বাসস্ট্যান্ডের হিমাচল পরিবহনের কাউন্টারে বাসের খোঁজ করতে আসা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মজিবুর রহমান। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল সভা-সমাবেশ করবে, এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু অন্যের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণে বাস চলাচল বন্ধ করে রাখার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না।
একই কাউন্টারে ঢাকামুখী আরেক যাত্রী মো. মিরাজ বলেন, তিনি ঢাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। জরুরি প্রয়োজনে এক দিনের ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়িতে এসেছেন। এখন যেতে পারছেন না বাস না চলার কারণে। কাউন্টার বন্ধ। পাশেই চট্টগ্রামের বাস কাউন্টারে খোঁজ করলে তাঁরা জানান, ঢাকামুখী বাস কখন ছাড়বে, তা কেউ বলতে জানেন না।
হাসপাতাল সড়ক মোড়ের ঢাকা-নোয়াখালী রুটে চলাচলকারী হিমাচল পরিবহনের কাউন্টারের কর্মচারী দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল শুক্রবার দুপুরের পর থেকে ঢাকামুখী বাস চলাচল কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ সকাল থেকে কোনো বাসই নোয়াখালী থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়নি। মালিকপক্ষ বাস বন্ধ রেখেছে। কেন রেখেছে, তা তাঁরা জানেন না।
বাস বন্ধ রাখার বিষয়ে একুশে পরিবহনের নোয়াখালীর মহাব্যবস্থাপক ছালামত উল্যাহ ওরফে মানিক প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকায় বিএনপির কর্মসূচির কারণে অনেকে আতঙ্কে আছেন। এ কারণে গতকাল দুপুরের পর থেকে ঢাকামুখী যাত্রীর সংখ্যা অনেক কমে গেছে। তাই তাঁরা বাধ্য হয়েই আপাতত বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন। কখন বাস চলাচল শুরু হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কখন বাস চলাচল শুরু হবে, তা এই মুহূর্তে নিশ্চিত বলা যাবে না। তবে বেলা দুইটার পর তাঁরা মালিকপক্ষ পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে তাঁদের কেউ বাস চলাচল বন্ধ রাখতে বলেননি বলেও দাবি করেন এই পরিবহনমালিক।