কুলাউড়ায় বাজারে একের পর এক চুরি-ডাকাতি, জড়িতদের গ্রেপ্তারে আলটিমেটাম
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌর শহরে সম্প্রতি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চুরি-ছিনতাইয়ে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে (আলটিমেটাম) দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রোববার বিকেলে পৌরসভার দক্ষিণ বাজারে কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে এ সময়সীমা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এম অতিকুর রহমান। তিনি বলেন, ১ জুন সকালে দুর্বৃত্তরা শহরের উত্তর বাজার এলাকার জুনেদ টেলিকম ও আপন টেলিকম নামের দুটি দোকানের তালা ভেঙে প্রায় ২০ লাখ টাকার মুঠোফোনের ডাকাতি করে। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে ডাকাতির দৃশ্য ধরা পড়ে। ৮ জুন সকালে একদল দুর্বৃত্ত কুলাউড়া পৌর এলাকার হাসপাতাল সড়কে আরসি ভ্যারাইটিজ স্টোরে ঢুকে লক্ষাধিক টাকা ও মুঠোফোন নিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় লোকজন ধাওয়া করে এক ব্যক্তিকে ধরে পুলিশে দেন। এর আগে ৭ জুন রাতে দক্ষিণ বাজারের কয়ছর টেলিকম থেকে চারটি মুঠোফোন নিয়ে পালানোর সময় একজনকে ধরে পুলিশে দেওয়া হয়। মাসখানেক আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি একই দোকান থেকে ১২ লাখ টাকার মুঠোফোন ডাকাতি হয়। এ ছাড়া ৬ ফেব্রুয়ারি স্বর্ণা সুপারি আড়ত থেকে ১২ লক্ষাধিক টাকার সিগারেট ডাকাতি হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আতিকুর রহমান বলেন, শহরের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চুরি-ডাকাতি বেড়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা খুবই ভীতির মধ্যে রয়েছেন। ব্যবসা করা অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও পুলিশের কর্মকর্তাদের এসব বিষয় জানানো হয়েছে। পাশাপাশি মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকেও এ বিষয়ে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে।
একের পর এক চুরি-ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে আতিকুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত তারা জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার বা চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধার করতে পারেনি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ চোর-ডাকাতদের গ্রেপ্তার ও মালামাল উদ্ধারে ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে ১৩ জুন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দোকানপাট বন্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন তাঁরা। পরে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির এই সাধারণ সম্পাদক।
চুরি-ডাকাতি প্রতিরোধে পুলিশের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরও সহযোগিতা দরকার মন্তব্য করে কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুছ ছালেক মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, কুলাউড়া শহরে ব্যবসায়ী সংগঠনের নিয়োজিত কোনো পাহারাদার নেই। উত্তর বাজারে সকালে চুরি হলেও সেখানে কোনো নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন না। এরপরও সাম্প্রতিক ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি বদরুজ্জামান, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি রফিক মিয়া, কোষাধ্যক্ষ বদরুল ইসলাম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এইচ ডি রুবেল, সংগঠনের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক এজাজ মাহমুদ চৌধুরী, সদস্য জুনেদ আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।