মাদারীপুর সদর হাসপাতালে অভিযানে অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম পেয়েছে দুদক

মাদারীপুর সদর হাসপাতালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযান। আজ সোমবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

মাদারীপুর সদর হাসপাতালে অভিযানে চিকিৎসাসেবা প্রদানে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত হাসপাতালের প্রতিটি বিভাগে অভিযান শেষে দুদকের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।

হাসপাতাল ও দুদকের সূত্র জানায়, মাদারীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সেবাপ্রত্যাশীরা দুদকের অভিযোগকেন্দ্রের হটলাইন নম্বরে (১০৬) কল করে অভিযোগ জানান। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি দল হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে অভিযান চালায়। এ সময় হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড, মেডিসিন স্টোর ও টিকিট কাউন্টার পরিদর্শন করেন দুদকের সদস্যরা। রোগীদের জন্য হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা খাদ্যের মানও পর্যবেক্ষণ করেন তাঁরা।

অভিযান শেষে দুদক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মাদারীপুর সদর হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোতে চরম অব্যবস্থাপনা রয়েছে। কর্তব্যরত নার্সদের দায়িত্বে অবহেলা, সরকারের বরাদ্দকৃত ওষুধের তালিকা ও হাসপাতাল থেকে রোগীদের জন্য ওষুধ বিতরণের তালিকায় গরমিল, চিকিৎসকদের হাজিরা তালিকায় স্বাক্ষর থাকা সত্ত্বেও কর্তব্যরত অবস্থায় কর্মস্থলে অনুপস্থিতি, একই ব্যক্তিকে বারবার ওষুধ সরবরাহের ঠিকাদারি প্রদান এবং খাদ্য সরবরাহের ক্ষেত্রেও একই ব্যক্তিকে বারবার ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ছাড়া হাসপাতালের ক্রয়–সংক্রান্ত বিভিন্ন নথিপত্র পর্যালোচনা করে নানা অসংগতি পাওয়ার কথা জানায় দুদক।

যাঁরা হাসপাতালের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার জন্য দায়ী, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে সুপারিশ করার কথা জানিয়েছে দুদক।
হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড, মেডিসিন স্টোর ও টিকিট কাউন্টার পরিদর্শন করেন দুদকের সদস্যরা। রোগীদের জন্য সরবরাহ করা খাদ্যের মানও পর্যবেক্ষণ করেন তাঁরা। আজ সোমবার দুপুরে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে
ছবি: প্রথম আলো

জানতে চাইলে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান বলেন, ‘হাসপাতালের প্রতিটি বিভাগে অব্যবস্থাপনা ও কমবেশি অনিয়ম রয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সরকারি সেবা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছি। যাঁরা হাসপাতালের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার জন্য দায়ী, তাঁদের বিরুদ্ধে বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশনে পাঠানো হবে। পরে কমিশন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে সুপারিশ করবে।’

এ বিষয় জানতে চাইলে মাদারীপুরের সিভিল সার্জন মুনীর আহমেদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ঢাকায় আছি। দুদক এসেছে তা ফোনে জেনেছি। তারা কিছু বিষয়ে অসংগতির কথা জানিয়ে তথ্য বিবরণী চেয়েছে। এর বাইরে হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের বিষয়ে কিছুই জানায়নি। দুদকের পক্ষ থেকে হাসপাতালের কোনো চিকিৎসক বা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালে আমরা তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’