কুমিল্লায় শহীদ হাদির খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে সর্বাত্মক অবরোধ

শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে কুমিল্লায় সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মীরা। রোববার বিকেলে কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার পূবালী চত্বরেছবি: প্রথম আলো

শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে কুমিল্লায় সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মীরা। কর্মসূচি পালনকালে হাদি হত্যার বিচার দাবিতে তাঁদেরকে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে। রোববার বেলা দুইটার পর থেকে কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার পূবালী চত্বরে অবরোধ শুরু করে সংগঠনটি। ইনকিলাব মঞ্চ ছাড়াও সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালনে অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করেছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, ওসমান হাদি হত্যার বিচার দাবিতে কান্দিরপাড় এলাকার পূবালী চত্বরে অবস্থান নিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সড়কে বসে পড়েন। কয়েকজনের হাতে বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে। ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মীরা ‘আমরা সবাই হাদি হব, যুগে যুগে লড়ে যাব’; ‘হাদি হাদি, আজাদি আজাদি’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’; ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’; ‘গোলামি না আজাদি, আজাদি আজাদি’ ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছিলেন।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনকিলাব মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক আল নাহিয়ানের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন ইনকিলাব মঞ্চ কুমিল্লা মহানগরের আহ্বায়ক গোলাম মোহাম্মদ সামদানী, এবি পার্টির কুমিল্লা জেলার আহ্বায়ক মিয়া মোহাম্মদ তৌফিক, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কুমিল্লা মহানগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী রাশেদুল হাসানসহ অনেকে। এ সময় হাদিকে নিয়ে লেখা একটি কবিতা আবৃত্তি করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কোবরা।

বক্তব্যে গোলাম মোহাম্মদ সামদানী বলেন, ‘আমরা হাদি হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না। কারা কারা এই খুনের নেপথ্যে জড়িত, তাঁদের নাম প্রকাশ করতে হবে। আমরা প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, আপনারা চাইলে অনেক কিছুই করতে পারেন; বিগত ফ্যাসিস্টের আমলে আমরা সেটা দেখেছি। তাহলে আমার ভাই হাদির খুনিরা কেন এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। আমরা বলতে চাই, প্রশাসনের দায়িত্বহীনতায় খুনিরা এখনো ধরা পড়ছে না।’

মিয়া মোহাম্মদ তৌফিক বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, হাদির খুনিরা এখনো বাংলাদেশেই আছে। দ্রুত খুনিদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগেই আমরা খুনিদের বিচার দেখতে চাই।’

ওসমান হাদি গত বছরের আগস্টে ইনকিলাব মঞ্চ গঠন করে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ এবং ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে সরব হয়ে সারা দেশে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন। আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে ঢাকা-৮ আসনে প্রার্থী হতে প্রচারও চালাচ্ছিলেন তিনি। ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টন এলাকায় তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য ওসমান হাদিকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তিনি মারা যান।