‘আমার স্বামীর কী দোষ, সে তো ভ্যানচালি সংসার চালাত’

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় গুলিবিদ্ধ ভ্যানচালক রেজাউল ইসলাম বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীনছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় গুলিবিদ্ধ দুজনের একজন ভ্যানচালক রেজাউল ইসলাম (৫০)। তিনি উপজেলার বহলবাড়ি সাতবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা। গত শনিবার ঘটনার সময় তিনি ভ্যান চালিয়ে সড়ক দিয়ে যাচ্ছিলেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার ছোড়া গুলিতে তিনি রক্তাক্ত হন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

রেজাউলের স্ত্রী সুলতানা খাতুন বলছিলেন, ‘আমার স্বামীর কী দোষ, সে তো ভ্যানচালি সংসার চালাত। তাঁক কেন গুলি করা হইল?’

রেজাউল ও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয়। আলাপে জানা গেল, রেজাউলের এক মেয়ে ও দুই ছেলে। মেয়ে জুঁইয়ের বিয়ে হয়েছে। ছেলে জুয়েল (২২) ও সোহেল (১২)। জুয়েল শারীরিক প্রতিবন্ধী। সোহেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। তাদের গ্রামের বাড়িতে রেখেই স্বামীকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে আছেন সুলতানা।

আরও পড়ুন

রেজাউল ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান। জায়গা–জমি তেমন নেই। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি রেজাউল এখন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। রেজাউল বলেন, শনিবার সন্ধ্যার দিকে ভ্যান চালিয়ে যাত্রী নামিয়ে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। পথে শিমুলিয়া গ্রামে সড়কে পৌঁছালে হইচই দেখতে পান। তিনি দ্রুত ভ্যান চালিয়ে সড়ক দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। একপর্যায়ে পেছন থেকে শক্ত কিছু বাঁ পাশে বগলের নিচে লাগে। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে জ্বালাপোড়া করতে থাকে। রক্ত বের হচ্ছিল। এরপর তাঁকে দ্রুত কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাতেই তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

রেজাউলের স্ত্রী সুলতানা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বললেন, ‘আমার স্বামীর ইনকামেই সংসার চলে। এখন কী হবে। কে ইনকাম করি দিবি। কী কইরি চইলব। আমার কেউ নেই। বাড়িত দুইটু ছেইলি আছে। একটা প্রতিবন্ধী। কে দেখবে তাদের।’

শনিবার উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামে গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটে। মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাহার আলী পিস্তল দিয়ে গুলি ছুড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ওই মামলায় আতাহার আলীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।