নিজেদের বাগানে যেতে ২৮ লাখ টাকার সেতু বান্দরবান জেলা পরিষদের

বান্দরবান সদর ক্যমলং এলাকায় পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্মিত এই সেতুর ওপারে নেই কোনো পাড়া, ঘর-বাড়ি ও সড়ক। সম্প্রতি বান্দরবান সদর ক্যমলং এলাকা থেকে তোলামংহাইসিং মারমা

সেতু পেরিয়ে যাওয়ার মতো নেই জনবসতি, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা; এমনকি নেই কাঁচা-পাকা কোনো ধরনের সড়কও। এরপরও একটি মৃতপ্রায় ছড়ার ওপর সাড়ে ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। বান্দরবান সদর উপজেলার ক্যমলংপাড়ার রাস্তার মাথা এলাকা থেকে কয়েক শ গজ দূরে সেতুটি নির্মাণ করছে পার্বত্য জেলা পরিষদ।

জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ওই এলাকায় জেলা পরিষদের ছয় একরের একটি বাগান রয়েছে। সেই বাগানে যেতেই দুই বছর ধরে সেতুটি নির্মাণ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর নির্মাণকাজ প্রায় শেষের দিকে। তবে সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। নির্মাণকাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার জহিরুল ইসলাম জানান, প্রকল্পে এটি পদচারী–সেতু হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। সাড়ে ২৮ লাখ টাকায় সংকুলান না হওয়ায় ধীরগতিতে কাজ করতে হচ্ছে।

ক্যমলংপাড়ার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, পাড়াসংলগ্ন জনগুরুত্বপূর্ণ একটি সেতু গত বছরের বন্যায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এরপরও ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। যেকোনো সময় সেতুটি ভেঙে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। পাড়ার বাসিন্দাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সেতুটির পাশে নতুন সেতু নির্মাণ না করে জনমানবহীন স্থানে সেতু নির্মাণ করে সরকারি টাকার অপচয় করছে জেলা পরিষদ।

জানতে চাইলে জেলা পরিষদের সদস্য ক্যসাপ্রু মারমা প্রথম আলোকে বলেন, ক্যমলং এলাকায় তাঁর ছয় একর পাহাড়ি জমি বাগানসহ জেলা পরিষদের কাছে বিক্রি করেছেন। ওই বাগানে জেলা পরিষদের উদ্যোগে একটি পর্যটন পার্ক ও বৃদ্ধাশ্রম করার পরিকল্পনা রয়েছে। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউর রহমান বলেন, সেতুটি নির্মাণের পর পশ্চিম পাশে অবস্থিত জেলা পরিষদের বাগানে রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু হবে।